নামায কিভাবে পড়বো-পর্ব-৭
(নামাযে কি কি পড়তে হয়)
মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী
এক নজরে নামায
৭. এক নজরে নামায
১. নামাযের ভেতরে পঠিত বিষয়সমূহ
২. নামায শেষে দোয়া
১. নামাযের ভেতরে পঠিত বিষয়সমূহ
নামাযের মধ্যে যে পঠিত কালামে পাকের কিছু আয়াত, দোয়া, দরূদ, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ ধারাবাহিকভাবে নিম্নে তুলে ধরা হলো :
জায়নামাযের দোয়া: اِنِّئْ وَجَّهْتُ وَجْهِئَ لِلَّذِئْ فَطَرَالسَّمَوَاتِ وَالْاَرْضَ حَنِيْفًا وَّمَا اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ
উচ্চারণ : ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্ল¬াযী ফাত্বারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন ।
অর্থ : নিশ্চয়ই আমি একমুখী হয়ে স্বীয় আসমান এবং জমিনের স্রষ্টা আল্লাহতায়ালার প্রতি একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশ করলাম, আর আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই। (সূরা-৬ আনআম : আয়াত-৭৯)
নিয়ত : ফজরের দু’রাকা’আত ফরয : (যখন যে নামাজ পড়বে তার মনে মনে স্থির করাই নিয়্যাত)
نَوَيْتُ اَن ْاُصَلِّىَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْفَجْرِ فَرْضُ اللهِ تَعَالٰى مُتَوَجِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللهُ اَكْبَر
অর্থ : নাওয়াইতু আন উসাল্লি¬য়া লিল্লাহি তা’আলা রাকা’আতাই সালাতিল ফাজরি ফারদুল্ল¬াহিতা’আলা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি-আল্ল¬াহু আকবার।
অর্থ : আমি ফজরের দু’রাকা’আত ফরজ নামায আদায় করার জন্য নিয়ত করলাম Ñ আল্লাহু আকবার।
ইমামের পিছনে পড়লে বলতে হবে : ‘ইকতিদাইতুল বিহাজাল ইমাম’ এই ইমামের পেছনে নিয়ত করলাম।
একাকী নামায পড়ার সময় বলতে হবে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে ফজরের দু‘রাকাত ফরয নামায পড়ছি-আল্লাহু আকবার। দুই রাকা’আত নামায হলে رَكْعَتَى “রাকা’আতাই”, তিন রাকা’আত নামায হলে রাকা’আতাই-এর স্থলে ثلَاثَ رَكْعَاتِ ‘‘ছালাছা রাক‘আতি’’ এবং ৪ (চার) রাকাত হলে اَرْبَعْ رَكْعَاتِ “আরবায়া রাক‘আতি” বলতে হবে।
তাকবিরে তাহরিমা : اَللهُ اَكْبَر ُ উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার। অর্থ : আল্ল¬াহই সর্বশ্রেষ্ঠ।
ছানার দোয়া: سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالٰى جَدُّكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ
উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তা‘আলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গায়রুকা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা এবং প্রশংসা বর্ণনা করছি : আপনার নাম বড় মহান। আপনার মাহাত্ম্য ও সম্মান অতীব উচ্চ এবং আপনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, যার সামনে মাথা নত করা যায়।
তা’উয (আউযুবিল্লাহ) : اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الْشَّيطَانِ الرَّجِيْمِ
উচ্চারণ : আ’উযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতোয়ানির রাজীম।
অর্থ : আমি বিতাড়িত শয়তানের (ওয়াসওয়াসা) কুমন্ত্রণা হতে একমাত্র আল্ল¬াহতায়ালার সাহায্য প্রার্থনা করছি।
তাসমিয়াহ : بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
অর্থ : আমি পরম দাতা দয়াময় আল্লাহ্তায়ালার নামে আরম্ভ করছি।
সূরা ফতিহা :
١ اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ﴿٢﴾ ا َلرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ﴿٣﴾ مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ ﴿٤﴾ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ ﴿٥﴾ اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ ﴿٦﴾ صِرَاطَ الَّذِيْنَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ ﴿٧﴾ غَيْرِالْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَاالضَّالِّيْنَ ﴿٧
উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতা’ঈন। ইহদিনাস সিরাতোয়াল মুসতাক্বীম। সিরাত্বাল লাযীনা আন‘আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ্বোয়াল্লিন। আমীন।
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্তা‘আলার জন্য যিনি সকল সৃষ্টিজগতের পালনকর্তা। যিনি দাতা, দয়াময় ও মেহেরবান যিনি বিচার দিনের মালিক (অধিপতি)। আমরা সর্বাবস্থায় একমাত্র তোমারই ইবাদত (দাসত্ব) করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখাও, সেসব লোকের পথ যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গযব (অভিশম্পাৎ) নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। (সূরা-১ ফাতিহা : আয়াত ১-৭)
আল্লাহতায়ালা নিয়ামত প্রাপ্তদের সম্পর্কে বলেছেন :
وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَالرَّسُولَ فَاُوْلٰئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ الْنَّبِيِيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالْشُهَدَاءِ وَاْلصّٰلِحِيْنَ وَحَسُنَ اُوْلٰئِكَ رَفِيْقْا
উচ্চারণ : ওয়া মাইইয়্যুতিইল্লাহা ওয়ার রাসূলা ফা উলাইকা মা’ আল্লাযিনা আন’আমাল্লাহু আলাইহিম মিনান নাবিয়্যিনা ওয়াসিদ্দিক্বিনা ওয়াশ শুহাদাই ওয়াস্সলিহিনা ওয়া হাসুনা উলাইকা রাফিক্ব।
অর্থ : যারা আল্লাহ এবং তার রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আনুগত্য করবে তারা নিয়ামত প্রাপ্তদের সঙ্গী হবে। নিয়ামত প্রাপ্তগণ হলেন নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সালেহীন (আত্মা এবং বক্ষস্থিত অদৃশ্য গোশত পিন্ড কলব ও দেহস্থ রিপুর অনিষ্ট থেকে পরিশুদ্ধ) ব্যক্তিগণ। আর তাদের সাহচর্যই হল সর্বোত্তম। (সূরা-৪ নিসা : আয়াত- ৬৯)।
যে কোনো একটি সূরা বা সুরাংশ : যেমন সূরা ইখলাস :
قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ اَللهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ﴿٣﴾ وَلَم ْيَكُنْ لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤
উচ্চারণ : ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুস সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
অর্থ : বলুন, তিনি আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেন নাই এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নাই। এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নাই। (সূরা-১১২ ইখলাছ : আয়াত ১-৪)
এরপর তাকবীর বলা হয় : اَللهُ اَكْبَر উচ্চারণ : আল্ল¬াহু আকবর। অর্থ : আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ।
রুকু অবস্থায় বলা হয় : سُبحَانَ رَبِّىَ الْعَظِيْم
উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম।
অর্থ : আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
এছাড়া আরো পড়া যায় : سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِىْ
উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ কর।
রুকু থেকে দাঁড়ানোর সময় বলা হয় : سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
উচ্চারণ : সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ।
অর্থ : আল্লাহতায়ালা প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন।
দাঁড়িয়ে বলা হয় : رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ – حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ
উচ্চারণ : রাব্বানা লাকাল হামদ, হামদান কাসিরান, ত্বায়্যিবান মুবারাকান ফীহি
অর্থ : হে আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, এমন ব্যাপক প্রশংসা যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক, বরকত হোক।
তাকবীরে বলা হয় : اَللهُ اَكْبَر ُ
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবর।
অর্থ : আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ
সিজদাতে বলা হয় : سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي
উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।
অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
এছাড়াও পড়তে হয়-سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّنَاَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِىْ
উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।
অর্থ : হে আল্লাহ তুমি পাক পবিত্র হে আমাদের রব তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ কর।
সেজদার মাঝে বসা অবস্থায় পড়ার দোয়া :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِىْ وَارْحَمْنِىْ وَاهْدِنِى وَاعْفِنِىْ وَارْزُقْنِى وَازْبِرْنِى وَارْفَعْنِىْ
উচ্চারণ : আল্ল¬াহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়াহফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফা’নি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ, আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।
তাশাহুদ :
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوٰاتُ وَالْطَيِّبَاتُ – اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ
اَلسَّلَام ُعَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ اَشْهَدُاَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ
উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সালাওয়াতু ওয়াত তাইয়্যিবাতু। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আ‘লা ইবাদিল্ল¬াহিস সালিহীন। আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থ : সমস্ত সম্মান মর্যাদা নামায (শারীরিক ইবাদাত) এবং আত্মিক (জীবত্মার) মানসিক (বক্ষ : স্থিত) অদৃশ্য গোশত পিন্ড কলব) ও শারীরিক (দেহাভ্যন্তরস্থ রিপুর অনিষ্টমুক্ত) পবিত্রতা বা পরিশুদ্ধতা শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার জন্য নিবেদিত। হে নবী! আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) রহমত (করুণা) এবং বরকত (অনুগ্রহ) অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক। আমাদের প্রতি এবং সালিহীন (আত্মিক মানসিক শারীরিক পরিশুদ্ধ সম্পন্ন) বান্দাদের প্রতিও সীমাহীন সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্ল¬াহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল (প্রেরিত পুরুষ)।
দরূদ :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَهِيْمَ وَعَلٰى اَلِ اِبْرٰهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَ هِيْمَ وَعَلٰى اَلِ اِبْرٰهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লি আ‘লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ‘লা আলে মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুমা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলে মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আলে ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার বংশধরদের প্রতি রহমতন বর্ষণ করো। যেমন রহমত বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম (আ:) এবং তার বংশধরদের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি অত্যন্ত প্রশংসিত এবং মহান। হে আল্লাহ! হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করো যেমন বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম (আ:) এবং তার বংশধরদের প্রতি। হে মহিমাময়! নিশ্চয়ই সমস্ত প্রকার প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য।
দুই, তিন ও চার রাকা’আত শেষে পড়তে হয় : তাশাহুদ ও দরূদ
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوٰاتُ وَالْطَيِّبَاتُ – اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَ بَرَكَاتُهُ
– اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَاد ِاللهِ الصَّالِحِيْنَ اَشْهَدُاَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ
উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সালাওয়াতু ওয়াত তাইয়্যিবাত। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আ‘লা ইবাদিল্লাহিছ ছালেহীন। আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদুআন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থ : সমস্ত সম্মান মর্যাদা, নামায এবং আত্মিক, মানসিক, অদৃশ্য গোশত পিন্ড কলব ও শারীরিক পবিত্রতা বা পরিশুদ্ধতা শুধুমাত্র আল্লাহতাআলার জন্য নিবেদিত। হে নবী! আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) রহমত (করুণা) এবং বরকত (অনুগ্রহ) অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক। আমাদের প্রতি এবং সালিহীন (আতিœক মানসিক শারীরিক দিক থেকে পরিশুদ্ধ) বান্দাদের প্রতিও সীমাহীন সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্ল¬াহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍوَّعَلٰى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرٰهِيْمَ وَعَلٰى اَلِ اِبْرٰهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
اّللهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَ هِىْمَ وَعَلٰى اَلِ اِبْرٰهِيْمَ اِنَّكَ حَمِئْدٌ مَّجِيْدٌ
উচ্চারণ : আল্লাহুমা সাল্লে আ‘লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ‘লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইবরাহীম ওয়া আ’লা আলি ইবরাহীমইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুমা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আ’লা ইবরাহীমওয়া আ’লা আলি ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার বংশধরদের প্রতি রহমত বর্ষণ করো। যেমন রহমত বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং তার বংশধরদের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি অত্যন্ত প্রশংসিত এবং মহান। হে আল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করো যেমন বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তার বংশধরদের প্রতি। হে মহিমাময়! নিশ্চয়ই সকল প্রকার প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য।
দু’আয়ে মাছুরা :
اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ ظَلَمتُ نَفْسِىْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّلاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلاَّ اَنْتَ فَاغْفِرْلِى ْمَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِى ْاِنَّكَ اَنْتَ الْغَفُوْرُالرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী জালামতু নাফসী জুলমান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি এবং তুমি ভিন্ন কেউই পাপসমূহ ক্ষমা করতে পারে না। অতএব তুমি নিজ হাতে আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার উপর রহমত (করুণা) বর্ষণ করো। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
দোয়া কুনুতে (বিতরের নামাজে) বলা হয় :
ااَللّٰهُمَّ َ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِى عَلَيْكَ الْخَيْرَ –وَنَشْكُرُكَ وَلاَنَكْفُرُ كَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ
مَنْ يْفْجُرُكَ اَللّٰهُمَّ اِيْاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ و َالَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقْ
উচ্চারণ : আল্লাহুমা ইন্না নাছতা’ঈনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নু’মিনু বিকা ওয়ানাত্ওায়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুসনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা-নাকফুরুকা, ওয়া নাখলা‘উ ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়ালাকা নুসাল্লী ওয়া নাসজুদু ওয়া ইলাইকা নাস‘আ ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আযাবাকা ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারী মুলহিক্ব।
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমরা তোমার কাছে সাহায্য প্রার্থী, ক্ষমাপ্রার্থী, তোমার প্রতি নিশ্চিত বিশ্বাসী এবং তোমার উপর আস্থাশীল। আমরা তোমার প্রশংসা করি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আমরা তোমার অমান্যকারীদের দলভুক্ত নই। যারা তোমার অবাধ্য আমরা তাদেরকে পরিত্যাগ করি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করি। হে আল্লাহ! আমরা কেবল তোমারই ইবাদত (দাসত্ব) করি। কেবল তোমারই জন্য সালাত আদায় করি, তোমারই উদ্দেশ্যেই সিজদাবনত হই। তোমার নৈকট্য লাভের জন্য সাধনায় লিপ্ত হই। তোমারই সামনে হাজির হই। তোমার রহমত প্রাপ্তির আশায় থাকি। আর তোমার আযাবের ভয়ে ভীত হই। যদিও জানি তোমার আযাব কাফিরদের জন্য নির্দিষ্ট।
নামায শেষে বলা হয় : اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অর্থ : তোমার প্রতি আল্লাহর সালাম (শান্তি) ও রহমত (করুণা) বর্ষিত হোক।
তোমার মুমিন বান্দাহ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে উপরোল্লি¬খিত বিস্ময়কর ও আবেগাপ্লুতত উপস্থাপনা, প্রশংসা, প্রার্থনা, অনুনয় বিনয়ের মাধ্যমে কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা দ্বারা নামায সম্পাদন করে। এই নামাযই একমাত্র দাসত্ব যা বান্দাহ ও আল্লাহর মধ্যে সরাসরি যোগসূত্র স্থাপন করে। আমরা যদি অর্থের দিকে গভীর মনোনিবেশ করে সালাত আদায় করি তবেই সালাতের যথার্থ মর্ম ও আবেদন হৃদয়ঙ্গম করে সমাজে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ।
২. নামায শেষে দোয়া
সালাম ফিরানোর পর ৩ (তিন) বার আস্তাগফিরুল্লাহ (اَسْتَغْفِرُ اللهَ) এবং একবার আল্লাহু আকবার (اَللهُ اَكْبَرْ) এরপর-পড়তে হয়-
اَللّٰهُمَّ اَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلاَلِ وَ الْاِكْرَامِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতাছ সালামু ওয়া মিনকাছ সালামু তাবারাকতা ইয়া জালজালালি ওয়াল ইকরাম।
অর্থ : হে আল্লাহ! শান্তির উৎস তুমি, তোমা থেকেই আসে শান্তি। হে প্রতাপশালী মহা মর্যাদার অধিকারী। তুমি বড়ই বরকতময়-প্রাচুর্যশালী।