নামায কিভাবে পড়বো (পর্ব-১০ )
(নামাযে কি কি পড়তে হয়)
মোহাম্মদ আবুল হোসাইন চৌধুরী
১০. নামায সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ আমল
১. ফযরের নামাজের পরের আমল
২. রাতে ঘুমাবার পূর্বের আমল
৩. আল-কোরআনের কতিপয় দোয়া
৪. দৈনন্দিন ব্যবহারিক দোয়া
নামায সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ আমল
১. ফযরের নামাজের পরের আমল
১০ বার : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া-লাহুল হামদু ইউহয়ী ওয়া ইউমীতু, ওয়াহুয়া হাইয়ুন লা-ইয়ামুতু-আবাদান আবাদা, বি ইয়াদিহিল খাইরু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো অভিভাবক নেই। তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই। রাজ্যের অধিপতি তিনি। তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা, তিনি জীবন দেন তিনি মৃত্যু দেন, আর তিনি হচ্ছেন চিরঞ্জীব, তাঁর কোনো মৃত্যু নেই, চিরদিনের জন্য চিরকালের জন্য, তাঁরই হাতে সকল কল্যাণ নিহিত এবং সব কিছুর ওপরই তিনি ক্ষমতাবান।
১০০ বার : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া-লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই্ তিনি অদ্বিতীয় তার কোন শরীক নেই। সার্বভৌমত্ব ও সমস্ত প্রশংসা তারই। তিনি সর্বশক্তিমান।
১০০ বার : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা লাশারিক্বালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আল কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদির। ওয়াসুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। ওয়ালা হাওলা কুওঁয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তার কোনো শরীক নেই। সার্বভৌমত্ব ও সমস্ত প্রশংসা তারই। তিনি সর্বশক্তিমান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তিনি পবিত্র ও নিষ্কলুষ। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো তৎপরতা ও শক্তি কার্যকর হতে পারে না।
৩৩ বার : সুবহানাল্লাহ অর্থ : আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করি।
৩৩ বার : আল হামদুলিল্লাহ অর্থ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর
৩৩ বার : আল্লাহু আকবার অর্থ : আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ
আয়তুল কুরসী ১ বার :
আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউমুন, লাহু-মা ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি, মানযাল্লাযী ইয়াশ ফা’উ ইনদাহু ইল্লা বি‘ইযনিহি, ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালাইউহীতূনা বিশাইইম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা’-আ। ওয়াসিয়া কুরসিয়্যুহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা, ওয়ালা ইয়া’উদুহু হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলীয়্যুল ‘আযীম।
অর্থ : আল্লাহ তিনিই- যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি চির জীবন্ত, জমিনের সবকিছুরই তিনি মালিক। কেউই নেই যে তার বিনা অনুমতিতে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে সক্ষম। তাদের অগ্র-পশ্চাতে যা কিছু রয়েছে তিনি তা সবই অবগত। তিনি যাকে ইচ্ছা করেন সে ব্যতীত তাঁর ইলমের কিছু অংশও ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে না। তাঁর আসন সমস্ত আসমান এবং জমিনকেই পরিব্যপ্ত করে রেখেছে। আর সমস্ত আসমান ও জমিনের রক্ষণাবেক্ষণ তাকে বিন্দুমাত্রও ক্লান্ত করে না। তিনি সুউচ্চ ও মহান। (বাকারা -২৫৫)
সূরা হাশরের শেষাংশ ১ বার :
হুওয়াল্লা হুললাযী লা-ইলাহা ইল্লাহু আ’-লিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদাতি হুওয়ার রাহমানুর রাহীম। হুওয়াল্লা হুললাযী লা-ইলাহা ইল্লাহু আলমালিক্বুল কুদ্দুসুস সালামুল মু‘মিনুল মুহাইমিনুল আযীযুল জ্বাব্বারুল মুতাক্বাব্বিরু; সুবহানাল্লাহি-আম্মা ইউশরিকুন। হুয়াল্লা হুল খা-লিক্বুল বা-রিউল মুসাব্বিরু লাহুল আসমা-উল হুসনা; ইয়্যুসাব্বিহু লাহূ মা-ফিস্সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্বি, ওয়া হুওয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই্ অদৃশ্য ও প্রকাশ্য সবকিছুই তিনি জানেন। তিনি রহমান ও রহীম। আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি বাদশা, অতীব পবিত্র, পূর্ণাঙ্গ শান্তি, নিরাপত্তাদানকারী, হিফাযতকারী, সবার ওপর বিজয়ী, শক্তি বলে নিজের নির্দেশ কার্যকরী করতে সক্ষম। এবং সবার চেয়ে বড় হয়েই বিরাজমান থাকতে সক্ষম। আল্লাহ সেই সব শিরক থেকে পবিত্র বা লোকেরা করে থাকে। সেই পরম সত্তা তো আল্লাহই যিনি সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দানকারী এবং সেই অনুপাতে রূপদানকারী। উত্তম নামসমূহ তারই। আসমান ও যমীনের সবকিছু তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা করে চলেছে। তিনি পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।
সূরা বাকারার শেষ তিন আয়াত ১ বার :
লিল্লাহি মা ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্ধী; ওয়াইন তুবদু মা ফি আনফুসিকুম আও তুখফুহু ইউহাসিবকুম বিহিল্লাহ; ফাইয়াগফিরু লিমাইয়াশাউ ওয়াইউ’আযযিবু মাইইয়াশাউ; ওয়াল্লাহু আল্লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। (সূরা ২ বাকারা: আয়াত ২৮৪)
অর্থ : আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যাকিছু আছে, সবই আল্লাহর। তোমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করো বা লুকিয়ে রাখো, আল্লাহ অবশ্যি তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন, এটা তাঁর এখতিয়ারাধীন। তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তি খাটাবার অধিকারী।
আমানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির বাব্বিহী ওয়াল মু’মিনুন; কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহি ওয়াকুতুবিহী ওয়া রুসূলিহি; লানুফাররিকু বাইনা আহাদিম-মির রুসূলিহি; ওয়া ক্বালু সামি’না ওয়াআত’¡না, গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসীর। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৮৫)
অর্থ : রাসূল তার রবের পক্ষ থেকে তার ওপর যে হিদায়াত নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে। আর যেসব লোক ঐ রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাও ঐ হিদায়াতকে মনে প্রাণে স্বীকার করে নিয়েছে। তারা সবাই আল্লাহকে, তাঁর ফেরেশতাদেরকে, তাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রাসূলদেরকে মানে এবং তাদের বক্তব্য হচ্ছে : “আমরা আল্লাহর রাসূলদের একজনকে আর একজন থেকে আলাদা করি না। আমরা নির্দেশ শুনেছি ও অনুগত হয়েছি। হে প্রভু! আমরা তোমার কাছে গোনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করছি। আমাদের তোমারই দিকে ফিরে যেতে হবে।
লাইয়্যুকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা; লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত; রাব্বানা লা তুআখিযনা ইন্নাসীনা আও আখতা’না; রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইসরান কামাহামালতাহু আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিনা; রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা ত্বক্বাতালানা বিহি, ওয়াফু আন্না, ওয়াগফিরলানা, ওয়ার হামনা, আনতা মাওলানা ফানসুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন। (সূরা ২ বাকারা : ২৮৬)
অর্থ : আল্লাহ কারোর ওপর তার সামর্থ্যরে অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপান না। প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজেরই জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছে, তার প্রতিফলও তারই উপর বর্তাবে। (হে ঈমানদারগণ, তোমরা এভাবে দোয়া চাও) হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ্য আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো।
রাসূলুল্লাহ (স.)-এর রওযা শরীফে সালাম প্রেরণ :
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া নাবীয়্যাল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া খায়রী খালক্বিল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া সাইয়্যিদুল মুরসালীন
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া খাতামান নাবীয়্যিন
আসসালাত ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া শাফিয়াল মুজনিবীন
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া রাহমাতাললিল আলামীন
২. রাতে ঘুমাবার পূর্বের আমল
একদা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন আলী ! পাঁচটি কাজ সম্পাদন না করে নিদ্রা যেয়ো না।
প্রথমত – মিসকীনদের মধ্যে চার হাজার দেরহাম সাদকা করবে।
দ্বিতীয়ত – অন্তত এক খতম কুরআন পাঠ করবে।
তৃতীয়ত – জান্নাতের মূল্য পরিশোধ করবে।
চতুর্থত – হজ্জ আদায় করবে।
পঞ্চমত – সমগ্র দাবীদারদের তুষ্ট করবে।
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এতগুলি কাজ একরাতে সমাধা করা কিভাবে সম্ভবপর হবে? নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন-
প্রথমত: শয়নের আগে ৪ বার সূরা ফাতেহা পাঠ করবে। এতেই ফকীর-মিসকীনের মধ্যে চার হাজার দেরহাম সদকা দান করার তুল্য নেকি অর্জিত হয়ে যাবে।
আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়াইয়্যাকা নাসতা’ঈন। ইহদিনাছ ছিরাত্বল মুসতাক্বীম। সিরাত্বল লাযীনা আন‘আমতা আলাইহিম, গইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ্বোয়াল্লিন। আমীন।
অর্থ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য যিনি সকল সৃষ্টিজগতের পালনকর্তা। যিনি দাতা, দয়াময় মেহেরবান। যিনি বিচার দিনের মালিক (অধিপতি), আমরা সর্বাবস্থায় একমাত্র তোমারই ইবাদত (দাসত্ব) করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখাও, সেসব লোকের পথ যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছো। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গযব (অভিশম্পাৎ) নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
দ্বিতীয়ত: ৩ বার সূরা ইখলাস পাঠ করবে, এতে করে পূর্ণ এক খতম কুরআন পাঠ করার সমান নেকি অর্জিত হয়ে যাবে।
ক্বুল হুয়াল্ল¬াহু আহাদ। আল্ল¬াহুছ ছামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
অর্থ : বলুন, তিনি (আল্ল¬াহ) এক, অদ্বিতীয় আল্ল¬াহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেন নাই এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নাই। এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নাই।
তৃতীয়ত: দশবার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, এর দ্বারা তোমার বেহেশতের মূল্য পরিশোধ হয়ে যাবে।
আল্লাহুম্মা সল্লিআ‘লা মুহাম্মদিওঁ ওয়াআ‘লা আলে মুহাম্মাদিন কামা সাল্ল¬াইতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আলে ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
আল্লাহুমা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আ’লা ইবরাহীম ওয়া আ’লা আলে ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার বংশধরদের প্রতি রহমত বর্ষণ করো। যেমন রহমত বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং তার বংশধরদের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি অত্যন্ত প্রশংসিত এবং মহান। হে আল্লাহ! হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করো যেমন বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম (আ:) এবং তার বংশধরদের প্রতি। হে মহিমাময়! নিশ্চয়ই সকল প্রকার প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য।
চতুর্থত: সুবহানাল্লাহ- ৫ বার পাঠ কর। এর দ্বারা তুমি হজ্ব আদায় করার সমান নেকি লাভ করতে পারবে।
সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম, মাশাআল্লাহু কানা, মা-লাম ইয়াশাউ লাম ইয়াকুন
অর্থ : আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি নাই। আল্লাহ একমাত্র ভরসাস্থল।
পঞ্চমত: সুবহানাল্লাহি বেহামদিহি-১০ বার পাঠ কর, এতটুকুই তোমার জন্য এমন ফলপ্রসূ হবে, যেন তুমি সমস্ত দাবীদারগণকে তুষ্ট করে দিলে।
সুবহানাল্ল¬াহি বেহামদিহী, ওয়া সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম, ওয়া বেহামদিহী ওয়াসতাগফেরুল্লাহা রাব্বী মিন কুল্লে¬ যাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি
অর্থ : সকল প্রশংসাসহ আমি আল্লাহর হামদ প্রকাশ করছি আর পবিত্র সেই সত্তা যিনি মহান এবং তারই জন্য প্রশংসা। হে আল্লাহ আমার সকল অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করছি।
সংক্ষিপ্ত দরূদ : আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা সায়্যিদিনা মুহাম্মদ ওয়া আলা আলে সায়্যিদিনা মুহাম্মদ।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমাদের নেতা হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর বংশধরগণের ওপর নানাভাবে রহমত অবতীর্ণ কর।
সুবহানাল্লাহ ৫ বার :
সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়ালা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লা-হিল আলিয়্যিল আজীম, মাশাআল্লাহু কানা, মা-লাম ইয়াশাউ লাম ইয়াকুন।
অর্থ : আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। সকল প্রশংসা আল্লাহতায়ালার। আল্লাহ ছাড়া কারো কোন শক্তি নাই। আল্লাহ একমাত্র ভরসাস্থল।
সুবহানাল্লাহি বিহামদিহি ১০ বার :
সুবহানাল্লাহি বিহামদিহী, ওয়া সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম, ওয়া বেহামদিহী ওয়াসতাগফেরুল্লাহা রাব্বী মিন কুল্লে যাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি।
অর্থ : সকল প্রশংসাসহ আমি আল্লাহর হামদ প্রকাশ করছি আর পবিত্র সেই সত্তা যিনি মহান এবং তারই জন্য প্রশংসা। হে আল্লাহ! আমার সকল অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করছি।
নিোক্ত দোয়া ১০০ বার :
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া-লাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদীর।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ (হুকুমকর্তা) নেই। তিনি এক ও একক। তার কোন শরীক (অংশীদার) নেই। মহাবিশ্বের কর্তৃত্ব কেবল তাঁর। সমস্ত প্রশংসা তাঁর। সর্বশক্তিমান তিনি।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০০ বার :
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সবুহানাল্লাহিল আযীম।
অর্থ : আল্লাহর প্রশংসা সহকারে তাসবীহ করছি। এবং মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০০ বার :
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি।
অর্থ : আল্লাহর প্রশংসা সহকারে তাসবীহ করছি।
নি¤েœাক্ত দোয়া ১০০ বার :
সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি আসতাগফিরুল্লাহা ওয়াতুবু ইলাইহে।
অর্থ :আল্লাহর প্রশংসা সহকারে তাসবীহ করছি। আল্লাহর কাছে মাফ চাচ্ছি ও তার নিকট তওবা করছি।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০০ বার :
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহা রাব্বী মিন কুল্লি যাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার সকল অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করছি।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০০ বার :
আসতাগফিরুল্লাহাল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যূল কাইয়্যূম ওয়া আতুবু ইলাইহি।
অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে আমার সমস্ত গুনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করছি। যিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী সত্তা।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০ বার :
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিক্বালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদির। আলহামদু লিল্লাহি ওয়া ছুবহানাল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লা ওয়াল্লাহু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তার কোনো শরীক নেই। সার্বভৌমত্ব ও সমস্ত প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্বশক্তিমান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তিনি পবিত্র ও নিষ্কলুষ। আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহার সাহায্য ছাড়া কোনো তৎপরতা ও শক্তি কার্যকর হতে পারে না।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০০ বার
সুবহানাকা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা আছতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা
অর্র্থ : সমস্ত ক্রটি ও অক্ষমতা থেকে মুক্ত তুমি। তোমার প্রশংসা স্বীকার করে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তোমার কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থী তোমারই দিকে আমি প্রত্যাবর্তন করছি।
নিম্মোক্ত দোয়া ১০ বার :
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু লাহুল মুলকু ওয়া-লাহুল হামদু, লা-ইলাহা ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াত্তা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি অদ্বিতীয়। তার কোন শরীক নেই। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই তিনি এক ও একক। আল্লাহ ছাড়া কারো কোন শক্তি নাই, তিনি ছাড়া কোন ভরসাস্থলও নাই।
আয়তুল কুরসী ১ বার :
আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, লা তা’খযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাউমু, লাহু-মা ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি, মানযাল্লাযী ইয়াস ফা’উ ইনদাহু ইল্লা বি‘ইযনিহি, ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালাফাহুম, ওয়ালা ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা’-আ। ওয়াসিয়া কুরসিয়্যূহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা, ওয়ালা ইয়া’উদুহু হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলীয়্যুল ‘আযীম।
অর্থ : আল্লাহ তিনিই- যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি চির জীবন্ত, জমিনের সবকিছুরই তিনি মালিক। কেউই নেই যে তার বিনা অনুমতিতে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে সক্ষম। তাদের অগ্র-পশ্চাতে যা কিছু রয়েছে তিনি তা সবই অবগত। তিনি যাকে ইচ্ছা করেন সে ব্যতীত তাঁর ইলমের কিছু অংশও ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে না। তাঁর আসন সমস্ত আসমান এবং জমিনকেই পরিব্যপ্ত করেছে রেখেছে। আর সমস্ত আসমান ও জমিনের রক্ষণাবেক্ষণ তাকে বিন্দুমাত্রও ক্লান্ত করে না। তিনি সুউচ্চ ও মহান। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৫৫)
সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত ১ বার :
হুওয়াল্লা হুললাযী লা-ইলাহা ইল্লাহু আ’-লিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদাতি হুওয়ার রাহমানুর রাহীম। হুওয়াল্লা হুললাযী লা-ইলাহা ইল্লাহু আলমালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু‘মিনুল মুহাইমিনুল আযীযুল জ্বাব্বারুল মুতাক্বাব্বিরু; সুবহানাল্লাহি-আম্মা ইউশরিকুন। হুয়াল্লা হুল খা-লিকুল বা-রিউল মুসাব্বিরু লাহুল আসমা-উল হুছনা; ইয়্যুসাব্বিহু লাহূ মা-ফিস্সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্বি, ওয়া হুওয়াল আযীযুল হাকীম।
অর্থ : আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই্ অদৃশ্য ও প্রকাশ্য সবকিছুই তিনি জানেন। তিনি রহমান ও রহীম। আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি বাদশা, অতীব পবিত্র, পূর্ণাঙ্গ শান্তি, নিরাপত্তাদানকারী, হিফাযতকারী, সবার ওপর বিজয়ী, শক্তি বলে বলে নিজের নির্দেশ কার্যকরী করতে সক্ষম। এবং সবার চেয়ে বড় হয়েই বিরাজমান থাকতে সক্ষম। আল্লাহ সেই সব শিরক থেকে পবিত্র বা লোকেরা করে থাকে। সেই পরম সত্তা তো আল্লাহই যিনি সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দানকারী এবং সেই অনুপাতে রূপদানকারী। উত্তম নামসমূহ তারই। আসমান ও যমীনের সবকিছু তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা করে চলেছে। তিনি পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।
সূরা বাকারার শেষ ৩ আয়াত ১ বার :
লিল্লাহি মা ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্ধী; ওয়াইন তুবদু মা ফি আনফুসিকুম আও তুখফুহু ইউহাসিবকুম বিহিল্লাহ; ফা ইয়াগফেরু লিমাইয়াশাউ ওয়াইউ’আযযিবু মাইইয়াশাউ; ওয়াল্লাহু আল্লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৮৪)
অর্থ : আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর। তোমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করো বা লুকিয়ে রাখো, আল্লাহ অবশ্যি তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন, এটা তাঁর এখতিয়ারাধীন। তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তি খাটাবার অধিকারী।
আমানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির বাব্বিহী ওয়াল মু’মিনুন; কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহি ওয়াকুতুবিহী ওয়া রসূলিহি; লানুফাররিক্বু বাইনা আহাদিম-মির রসূলিহি; ওয়া ক্বালু সামি’না ওয়াআতা¡’না, গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছীর। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৮৫)
অর্থ : রাসূল তার রবের পক্ষ থেকে তার ওপর যে হিদায়াত নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে। আর যেসব লোক ঐ রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাও ঐ হিদায়াতকে মনে প্রাণে স্বীকার করে নিয়েছে। তারা সবাই আল্লাহকে, তাঁর ফেরেশতাদেরকে, তাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রাসূলদেরকে মানে এবং তাদের বক্তব্য হচ্ছে : ‘আমরা আল্লাহর রাসূলদের একজনকে আর একজন থেকে আলাদা করি না। আমরা নির্দেশ শুনেছি ও অনুগত হয়েছি। হে প্রভু! আমরা তোমার কাছে গোনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করছি। আমাদের তোমারই দিকে ফিরে যেতে হবে।
লাইয়্যুকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা; লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত; রাব্বানা লা তুআখিযনা ইন্নাসীনা আও আখতা’না; রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইছরান কামাহামালতাহু আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিনা; রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মালা ত্বক্বাতালানা বিহি, ওয়া’ফু আন্না, ওয়াগফিরলানা, ওয়ার হামনা, আনতা মাওলানা ফানসুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৮৬)
অর্থ : আল্লাহ কারোর ওপর তার সামর্থ্যরে অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপান না। প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজেরই জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছে, তার প্রতিফলও তারই উপর বর্তাবে। (হে ঈমানদারগণ, তোমরা এভাবে দোয়া চাও) হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ্য আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো।
রাসূলুল্লাহ (স.)-এর রওযা শরীফে সালাম প্রেরণ :
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া নাবীয়্যাল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া খায়রা খালক্বিল্লাহ
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া সাইয়্যিদুল মুরছালীন
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া খতামান নাবীয়্যিন
আসসালাত ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া শাফিয়াল মুজনিবীন
আসসালাতু ওয়াস সালামু আ’লাইকা ইয়া রাহমাতাললিল আলামীন
৩. আল কোরআনের কতিপয় দোয়া
ফাকাশাফনা-আনকা গিতা-আকা ফাবাসারুকাল ইয়াওমা হাদীদ।
অর্থ : আমরা তোমার কাছ থেকে আবরণ (পর্দা) সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ম। (সূরা ক্বাফ : আয়াত ২২)
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুববূন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।
অর্থ : হে আল্লাহ তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমাকে ভালবাসো, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আল্লাহুম্মা আয়ি’ন্না আ’লা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুছনি ই’বাদাতিকা ওয়া তিলাওয়াতিল ক্বোরআন।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে সাহায্য কর, তোমার যিকির করার, তোমার শুকরিয়া আদায় করার এবং তোমার উত্তম ইবাদাতগুলো আদায় করার ব্যাপারে এবং তোমার কুরআন পাঠ করার ব্যাপারে।
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন আযাবি জাহান্নামা, ওয়ামিন আযাবিল কাবরি, ওয়ামিন আযাবি ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি, ওয়ামিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।
অর্থ : আয় আল্লাহ! আমি জাহান্নামের আগুনের আযাব, কবরের আযাব, জীবিত মৃত অবস্থায় ফেতনা ও দাজ্জালের ফেতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’উজুবিকা মিন আযাবি জাহান্নামা ওয়াআ’উযুবিকা মিন অযাবিল কাবরি ওয়াআ’উযুবিকা মিন ফিতনাতি মসিহিদ্দাজ্জালি ওয়া’আউযবিকা মিন ফিতনাতি মাহইয়া ওয়ালমামাতি।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই দোযখ ও কবরের আযাব থেকে এবং দাজ্জাল এবং হায়াত ও মওতের ফিতনা থেকে।
আল্লাহুম্মাগ ফিরলি মাক্বাদদামাতু ওয়ামা আখখারতু ওয়ামা আসসারতু ওয়ামা আ’লানতু ওয়া আসরাফতু ওয়ামা আনতা আ’লামু বিহ মিননি আনতার মুকাদদামু ওয়াআনতাল মুআখখারু লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
অর্থ : আয় আল্লাহ! আমাকে মাফ করে দাও! মাফ করে দাও আমার আগে পরের এবং গোপন প্রকাশ্য সব গুনাহ। মাফ করে দাও আমার সব সীমালংঘন। মাফ করে দাও আমার সেইসব গুনাহ যা সম্পর্কে তুমি আমার চাইতে ভালো জানো। তুমিই অতীত, তুমিই ভবিষ্যত। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।
আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি ওয়াআনা আবদুকা ওয়ানা আলা আহদিকা ওয়াওয়াদীকা মাসতাত্বাতু আউযুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুওউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়াআবুউ বিজানবিই ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লাইয়্যূগফিরুযুনুবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : হে আল্লাহ, তুমিই আমার রব। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে পয়দা করেছ এবং আমি তোমারই দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার সাথে দেয়া ওয়াদা পালন করছি। আমার গুনাহর ক্ষতি থেকে তোমার কাছে পানাহ চাই। আমার উপর তোমার দেয়া নিয়ামতের কথা স্বীকার করছি। আমার গুনাহর কথাও স্বীকার করছি। তাই আমাকে মাফ করে দাও। তুমি ছাড়া মাফ করার যে কেউ নেই।
আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবাইঁ ইয়াসিরা। অর্থ : হে আল্লাহ! আমার হিসাব নিও সহজ করে।
আল্লাহুম্মা ইন্নী জালামতু নাফসী জুলমান কাসীরাওঁ ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্ল¬া আনতা ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি এবং তুমি ভিন্ন কেউই পাপসমূহ ক্ষমা করতে পারে না। অতএব তুমি নিজ হাতে আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার উপর রহমত (করুণা) বর্ষণ করো। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
আল্লাহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া’ফিনী, ওয়ার জুক্বনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফা’নী।
অর্থ : হে আল্ল¬াহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ,আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।
আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়ামিনকাস সালামু তাবারাকতা রাব্বানা ওয়াতা আলাইতা ইয়া যাল যালালে ওয়াল ইকরাম।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি শান্তি দানকারী, আমরা তোমারই কাছে শান্তি চাই। তুমি বরকতময় ও মহান এবং মর্যাদার অধিকারী।
আল্লাহুমা আযিরনি মিনান্নারি। অর্থ : ওগো আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি দাও।
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাহ।
অর্থ : হে আল্লাহ! তোমার নিকট তোমার সন্তুষ্টি ও বেহেশত কামনা করছি।
আল্লাহুম্মা ইন্নী আলা রিযক্বিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা।
অর্থ : আয় আল্লাহ! আমাকে সাহায্য করো সবসময় তোমাকে স্মরণ করতে, তোমার শুকরিয়া আদায় করতে আর সর্বোত্তম ও সর্বসুন্দরভাবে তোমার ইবাদত করতে।
আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যিনা, ওয়া মাইয়্যিতিনা, ওয়া ছাগীরানা, ওয়া কাবীরানা, ওয়া যাকারিনা, ওয়া উনসানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়ীহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ঈমান।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত, আমাদের মৃত, আমাদের ছোট ও বড়, আমাদের পুরুষ ও নারী সকলের গুনাহ মাফ করে দাও আমাদের মধ্যে উপস্থিত ও অন্পুস্থিত। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের মধ্যে যাদেরকে জীবিত রেখেছো তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখো এবং তুমি যাদের মৃত্যু দাও তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দাও।
আল্লাহুম্মা আয়ি’ন্নী আলা-গামারা-তিল মাউতি ওয়াসাকারাতিল মাউতি।
অর্থ : হে আল্লাহ! মৃত্যুর কাঠিন্য ও তার মারাত্মক কষ্টের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।
আল্লাহুম্মা বারিক্ব লানা ফিমা রাজাক্বতানা ওয়াক্বিনা আজাবান নার ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের রুযিতে বরকত দিন এবং আমাদেরকে দোযখের শাস্তি হতে বাঁচান।
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।
অর্থ : হে আল্লাহ তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ কর।
আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাততাওয়াবিনা ওয়াজআলনি মিনাল মুত্বাহহিরিনা ওয়াজ’আলনি মিন ইবাদিকাস সালিহীন ওয়াজ আলনি মিন ইবাদিকাল মুখলিসিনা ওয়াজ আলনি মিনাস সাবিক্বিনাল মুক্বাররাবিন।
অর্থ :হে আল্লাহ, আমাকে তাওফীক দাও যাতে আমি তাওবাকারী হই, আমাকে পবিত্র লোকদের মধ্যে শামিল কর, তোমার সালেহ ও মুখলিস বান্দাদের মধ্যে গণ্য হবার যোগ্য বানাও এবং তোমার নৈকট্য লাভকারী অগ্রবর্তীদের অন্তর্ভুক্ত কর।
রাব্বি আদখিলনী মুদখালা সিদক্বিনঁ, ওয়া আখরিজনী মুখরাজা সিদক্বিনঁ ওয়াজআল-লী মিল্লাদুনকা, সুলতানান-নাসীরা।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আমাকে প্রবেশ করাও কল্যাণের সাথে এবং আমাকে বের করো কল্যাণের সাথে। আর তোমার কাছে থেকে আমাকে দান করো সাহায্যকারী শক্তি। (সূরা ১৭ বনী ইসরাঈল : আয়াত ৮০)
রাব্বানা আতিনা ফিদ দুনিয়া হাসানাতাওঁ ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়াক্বিনা আযাবান নারে ওয়াআদখিলনাল জান্নাতা মা’আল আবরার। ইয়া আযীযু ইয়া গাফফারু ইয়া রাব্বাল আলামীন।
অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ দান কর এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা কর। আমাদেরকে নেক লোকদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করাও। হে পরাক্রমশালী! হে ক্ষমাশীল! হে বিশ্বজাহানের প্রতিপালক।
রাব্বানা তাক্বাব্বাল মিন্না; ইন্নাকা আনতাছ ছামীউল আলীম।
অর্থ : হে আমাদের রব! আমাদের এ কাজকে তুমি কবুল কর; তুমি নিশ্চয়ই সব কিছূ শুনতে পাও এবং সবকিছু জান।
রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা যুনুবানা ওয়াক্বিনা আযাবান্নারি।
অর্থ : হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি; আমাদের গুনাহসমূহ মাফ কর এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা কর।
রাব্বানা মা খালাক্বতা হাযা বাত্বিলান; সুবহানাকা ফাক্বিনা আযাবান্নার।
অর্থ : হে আমাদের পরোয়ারদিগার, এসব কিছু তুমি অর্থহীন ও উদ্দেশ্যহীনসৃষ্টি করোনি তুমি উদ্দেশ্যহীন ও কাজের বাতুলতা হতে পবিত্র। অতএব হে আল্লাহ দোযখের আযাব হতে আমাদের বাঁচাও।
রাববানা ফাগফিরলানা যুনুবানা ওয়াকাফফির আন্না সাইয়্যিয়াতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।
অর্থ : হে আমাদের পরোয়ারদিগার, যে অপরাধ আমরা করেছি তা ক্ষমা কর, আমাদের মধ্যে যা কিছু অন্যায় ও দোষ ত্রুটি রয়েছে তা দূর করে দাও এবং নেক লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি সম্পন্ন কর।
রাব্বানা আফরিগ আলাইনা ছোবরাও ওয়া তাওয়াফফানা মুসলিমীন।
অর্থ : হে আমাদের রব! আমাদের ধৈর্য ধারণের গুণ প্রদান কর আর আমাদেরকে দুনিয়া হতে এমন অবস্থায় উঠিয়ে নাও যখন আমরা তোমারই অনুগত।
রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আনতা খাইরুর রাহিমীন।
অর্থ : হে আমাদের পরোয়ারদিগার; আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের প্রতি রহম কর, তুমি সব রহমকারীদের থেকে উত্তম রহমকারী।
রাব্বিরহামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী ছাগিরা।
অর্থ : হে আমার রব। আমার পিতামাতার উপর তেমনি রহম কর যেমন তারা ছোট সময় আমাকে লালন পালন করেছে।
রাদীতু বিল্লাহি রাব্বান, ওয়া বিল ইসলামী দ্বীনান ওয়া বি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যাও রাসূলান (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
অর্থ : আমি সন্তুষ্ট হয়েছি আল্লাহকে রব হিসেবে লাভ করে, ইসলামকে দ্বীন বা জীবন বিধান হিসেবে লাভ করে এবং হযরত মুহাম্মদকে সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূল হিসেবে পেয়ে।
রাব্বানা লা তুআখিযনা ইন্নাসীনা আও আখতা’না; রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইছরান কামাহামালতাহু আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিনা; রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা ত্বক্বাতালানা বিহি, ওয়াফু আন্না, ওয়াগফিরলানা,ওয়ার হামনা, আনতা মাওলানা ফানসুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন। (সূরা বাকারা-২৮৬)
অর্থ : হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামার্থ আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো।
রাব্বানা যালামনা আন ফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাছিরিন।
অর্থ : হে প্র্রভু। আমরা নিজেরাই নিজেদের ওপর যুলুম করেছি এখন তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না করো আর আমাদের প্রতি রহম না করো, তা হলে আমরা নিশ্চিতই ধ্বংস হয়ে যাব।
ইহ দিনাছ ছিরাতাল মুসতাক্বিম। অর্থ : আমাদেরকে সঠিক দৃঢ় পথ প্রদর্শন কর। (ফাতেহা-৫)
রাব্বানা লা তুযিগ ক্বুলুবানা বা’দা ইয হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাতান ইন্নাকা আনতাল ওয়াহাব।
অর্থ : হে পওয়ারদিগার! তুমিই যখন আমাদেরকে সঠিক সোজা পথে এনেছ, তখন তুমি আমাদের মনে কোন প্রকার বক্রতা ও কুটিলতা সৃষ্টি করে দিওনা। আমাদেরকে তোমার মেহেরবানীর ভান্ডার হতে অনুগ্রহ দান কর, কেননা প্রকৃত দাতা তুমিই। (আল ইমরান-৮)
রাব্বানা হাব লানা মিন আয ওয়া যিনা ওয়াযুররি ইয়াতিনা কূররাতা আ’ইউনিন ওয়াজ আলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।
অর্থ : হে আমাদের রব, আমাদের স্ত্রীদের ও আমাদের সন্তানদের দ্বারা আমাদের চক্ষুর শীতলতা দাও এবং আমাদেরকে পরহেজগার লোকদের ইমাম বানাও। (ফোরকান -৭৪)
রাব্বানাগ ফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি ওয়ালা তাযআল ফি ক্বুলুবিনা গিল্লাযিনা আমানু রাব্বানা ইন্নাকা রাউফুর রাহিম।
অর্থ : হে প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং আমাদের সে সব ভাইদেরকে ক্ষমা কর, যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে। আর আমাদের দিলে ঈমানদার লোকদের জন্য কোন হিংসা ও শত্রুতার ভাব রেখোনা। হে আমাদের আল্লাহ! তুমি বড়ই অনুগ্রহ সম্পন্ন করুণাময়। (হাশর-১০)
রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা যুনুউবানা ওয়া ক্বিনা আযাবাননার।
অর্থ : হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের গুনাহখাতা মাফ কর এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে বাঁচাও।
রাব্বানা ওয়াদ খিলহুম জান্নাতি আনিল্লাতি ওয়াততাহুম।
অর্থ : হে আমাদের প্রতিপালক! তাদেরকে প্রবেশের অধিকার দান কর অনন্ত জান্নাতে, যার ওয়াদা তুমি তাদের সাথে করেছ। (আল গাফের-৮)
৪. দৈনন্দিন ব্যবহারিক দোয়া
ঘুমাবার পূর্বের দুআ : আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।
অর্থ : আল্লাহ! আমি তোমারই নামে মৃত্যুবরণ করি এবং তোমারই নামে জীবনধারণ করি।
ঘুম থেকে জেগে দুআ : আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাহিন নুশুর।
অর্থ : সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন এবং তার কাছেই ফিরে যেতে হবে।
মসজিদে প্রবেশে দুআ :
মসজিদ ডান পা আগে দিয়ে প্রবেশ করা এবং এই দোয়া পড়া : আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক।
অর্থ :হে আল্লাহ! তোমার রাহমতের দরজা আমার জন্য খুলে দাও।
মসজিদ হতে বের হওয়ার দুআ :
মসজিদ হতে বাম পা আগে দিয়ে বের হবার সময় এ দুআ পড়া : আল্লাহুম্মা ইন্নি আছআলুকা মিন ফাদলিকা।
অর্থ : হে আল্লাহ! তোমার পক্ষ থেকে আমি কল্যাণ কামনার জন্য বের হচ্ছি।
খাবার পূর্বে দুআ :
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিমা রাজাকতানা ওয়াকিনা আজাবান নার বিসমিল্লাহি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমার রুযিতে বরকত দিন এবং আমাকে দোযখের শাস্তি হতে বাঁচান। আল্লাহর নামে শুরু করছি।
খাবার পর দুআ :
আলহামদু লিল্লাহিল্লাযি আত’আমানা ওয়া সাকানা ওয়াজা ‘আলানা মিনাল মুসলিমীনা।
অর্থ : সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে খাওয়ালেন, পান করালেন এবং আমাদেরকে মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
ঘর থেকে বের হবার দু’আ :
বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কলতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহর নামে ওয়াদা করছি, আল্লাহর উপর ভরসা করছি। আল্লাহ ছাড়া (আমাদের) কোনো উপায় ও শক্তি নেই।
কবর জিয়ারতের দুআ :
ক) আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবূরি মিনাল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাতি আনতুম লানা সালাফুন ওয়া নাহনু লাকুম তাবয়ূন।
অর্থ : হে কবরবাসী পুরুষ ও মহিলাগণ! তোমাদের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। তোমরা আমাদের অগ্রবর্তী এবং আমরা তোমাদের অনুসরণকারী।
খ) আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবূরি ইয়াগ ফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম ওয়াআন্তুম সালাফুনা ওয়ানাহনু বিল আছরি।
অর্থ : হে কবরের বাসিন্দাগণ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ তোমাদের আমাদের সকলেরই গুনাহ মাফ করুন। তোমরা আমাদের অগ্রবর্তী আর আমরা তোমাদের অনুসরণকারী।
নৌযানে বা পুলে আরোহনের দুআ :
বিসমিল্লাহি মাজরেহা অমুরসাহা ইন্না রাব্বি লাগাফু-রুর রাহীম।
অর্থ : এ চলা এবং থামা আল্লাহরই নামে। নিশ্চয়ই আমার প্রভু ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
যানবাহনে ভ্রমণের দুআ :
সুবহানাল্লাযি সাখখারা লানা হাযা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীনা ওয়াইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনক্বালিবুন।
অর্থ : পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই সত্ত্বার, যিনি এসব কিছুকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে এনে দিয়েছেন। অন্যথায় আমরা এসব আয়ত্তে আনতে পারতাম না। এভাবেই আমরা সবাই তার দিকে ফিরে যেতে বাধ্য।
প্রস্রাব-পায়খানায় প্রবেশের দুআ :
আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবা-ইছ।
অর্থ : হে আল্লাহ! স্ত্রী-পুরুষ জ্বিনের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।
প্রস্রাব-পায়খানা করার পর দুআ :
আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আযহাবা আন্নীল আযা ওয়াআ-ফানী।
অর্থ : সেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি, যিনি আমার কাছ থেকে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করে দিলেন। এবং প্রশান্তি দান করেছেন।
মোসাফাহার দুআ :
ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম।
অর্থ : আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন।
সূরা বাকারার শেষ ৩ (তিন) আয়াত :
লিল্লাহি মা ফিস সামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্ধী; ওয়াইন তুবদু মা ফি আনফুসিকুম আও তুখফুহু ইউহাসিবকুম বিহিল্লাহ;ফাইয়াগফিরু লিমাইয়াশাউ ওয়াইউ’আযযিবু মাইইয়াশাউ; ওয়াল্লাহু আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৮৪)
অর্থ : আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর। তোমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করো বা লুকিয়ে রাখো, আল্লাহ অবশ্যি তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন, এটা তাঁর এখতিয়ারাধীন। তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তি খাটাবার অধিকারী।
আমানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির বাব্বিহী ওয়াল মু’মিনুন; কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহি ওয়াকুতুবিহী ওয়া রসূলিহি; লানুফাররিকু বাইনা আহাদিম-মির রসূলিহি; ওয়া ক্বালু সামি’না ওয়াআত’¡না, গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছীর। (সূরা ২ বাকারা : আয়াত ২৮৫)
অর্থ : রাসূল তার রবের পক্ষ থেকে তার ওপর যে হিদায়াত নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে। আর যেসব লোক ঐ রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাও ঐ হিদায়াতকে মনে প্রাণে স্বীকার করে নিয়েছে। তারা সবাই আল্রাহকে, তাঁর ফেরেশতাদেরকে, তাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রাসূলদেরকে মানে এবং তাদের বক্তব্য হচ্ছে : “আমরা আল্লাহর রাসূলদের একজনকে আর একজন থেকে আলাদা করি না। আমরা নির্দেশ শুনেছি ও অনুগত হয়েছি। হে প্রভু! আমরা তোমার কাছে গোনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করছি। আমাদের তোমারই দিকে ফিরে যেতে হবে।
লা-ইয়্যুকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা; লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত; রাব্বানা লা তুআখিযনা ইন্নাসীনা আও আখত্বা’না; রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইছরান কামা হামালতাহু আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিনা; রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা ত্বক্বাতালানা বিহি, ওয়াফু আন্না, ওয়াগফিরলানা, ওয়ার হামনা, আনতা মাওলানা ফানছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন। (সূরা ২ বাকারা: আয়াত ২৮৬)
অর্থ : আল্লাহ কারোর ওপর তার সামর্থ্যরে অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপান না। প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজেরই জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছে, তার প্রতিফলও তারই উপর বর্তাবে। (হে ঈমানদারগণ, তোমরা এভাবে দোয়া চাও) হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ্য আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো।