Home ইতিহাস সাম্রাজ্যের কবরস্থান

সাম্রাজ্যের কবরস্থান

by Jafor Salah
0 comment

আফগানিস্তানের হেরাত দূর্গকে গত ২৩৩০ বছর ধরে পৃথিবীর ১২টি সাম্রাজ্য তাদের হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০অব্দে অ্যালেকজেন্ডার দ্যা গ্রেট যখন আজকের আফগানিস্তানে অভিযান চালান,তখন এই দূর্গ নির্মাণ করেন।
পার্থিয়ান, কুশান, সাসানিদ, সেলজুক, গজনবী, ঘুরি সাম্রাজ্যসহ প্রায় ১২টি সাম্রাজ্যের সদর দপ্তর ছিলো এই দৃষ্টিনন্দন হেরাত দূর্গ।পৃথিবীর বিজেতা কতো সম্রাট, সেনাপতি এই দূর্গে থাকেন!নানান সময় দূর্গটি সংস্কার করা হয়।
হেরাত দূর্গের আশেপাশে সুস্বাদু নানান জাতের ফল পাওয়া যায়।ফলে ইসলাম-পূর্ব যুগে এই দূর্গটি মদ-উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ছিলো।ইসলাম-যুগে হেরাতের দূর্গটি পরিণত হয় সিল্ক-রোডের যাত্রীদের ফল কেনাবেচার স্থান হিসেবে। ইটালিয়ান পর্যটক মার্কো পোলো হেরাত দূর্গকে অভিহিত করেন ‘ফ্লোরেন্স অব এশিয়া’ বলে।
হেরাতে কিভাবে ইসলামের প্রসার হয়?
-আহনাফ ইবনে কায়স (রাহিমাহুল্লাহ) নামে একজন তাবে’ঈ ছিলেন।তিনি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুগ পেয়েছেন,তবে তাঁকে দেখেননি। রাসূলুল্লাহ (সা:) আহনাফ ইবনে কায়সের জন্য নামধরে আল্লাহর কাছে দু’আ করেন।আহনাফ বলেন,’কিয়ামতের দিন আমি কোনো কিছু নিয়ে যদি আশাবাদী হই,তাহলে তা হবে আমার জন্য নবিজীর (সা:) সেই দু’আ।’
৬৫২ খ্রিস্টাব্দে সেই প্রখ্যাত তাবে’ঈ আহনাফ বিন কায়স হেরাত অবরোধ করেন।হেরাত দূর্গ মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণে আসে। গতো ২৩০০বছর ধরে পৃথিবীর ১৪টি সাম্রাজ্য আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়েছে,শাসন করেছে। সাম্প্রতিককালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর আমেরিকা; পৃথিবীর দুই ‘শক্তিশালী’ সাম্রাজ্যও সেখান থেকে পিছু হটেছে।ইতিহাস সমৃদ্ধ সেই দেশে নানান সাম্রাজ্য অভিযান চালালেও এখন সেখানে আছে কেবল আফগান ও ইসলাম।
বলা হয়ে থাকে যে,কোনো সাম্রাজ্য যদি তার পতন ডেকে আনতে চায়,তারা যেনো আফগানিস্তানে অভিযান চালায়।ইতিহাসে বেশ কয়েকবার কথাটির প্রমাণ পাওয়া যায়।ফলে এই দেশের নামই হয়ে গেছে ‘The Graveyard of the Empires’ বা ‘সাম্রাজ্যের কবরস্থান’।
[Dr. Waleed Hakim -এর পোস্ট থেকে অনূদিত]
কৃতজ্ঞতাঃ-আরিফুল ইসলাম।

You may also like