রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি ভয়ের কথা বলেছেন। জানিয়েছেন অধিকাংশ নারী জাহান্নামি। তাই নারীদেরকে দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক সুন্দর ও নিরাপদ করার অনেক নসিহত পেশ করেছেন।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যত উত্তম ও মধুর হবে, দাম্পত্য জীবনে সুখ ও শান্তি তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। কুরআন এবং হাদিসের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, উত্তম স্ত্রী হলো তারা, যারা স্বামীকে যথাযথ সম্মান করে কারণ পরস্পরের প্রতি যথাযথ সম্মানই দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের উপায়।
অতঃপর স্বামীর ধন-সম্পদ সংরক্ষণ করার পাশাপাশি নিজেদের সতীত্ব রক্ষায় সতর্ক থাকে। স্বামীর উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিতিতে এ দুটি কাজ স্ত্রীর প্রধান কর্তব্য।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কতটা গাঢ় তার প্রমাণ কুরআনে কারিমে আল্লাহ তাআলা তা ঘোষণা করেন-
‘তারা তোমাদের পোশাকস্বরূপ এবং তোমরাও তাদের পোশাকস্বরূপ।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)
★ স্ত্রী গ্লাসের যে স্থানে ঠোঁট রেখে পানি পান করে সেই স্থানে ঠোঁট রেখে পানি পান করা সুন্নাহ।
(মুসলিমঃ৫৭৯)
★ স্ত্রীর কাছে চুল আঁচড়ে নেয়া সুন্নাহ। আয়েশা (রাঃ) রাসূল (ﷺ) এর চুল আঁচড়ে দিতেন
(বুখারীঃ২৯৫, মুসলিমঃ৫৭১)
★ স্ত্রীর ব্যাবহার করা মেসওয়াক দিয়ে মেসওয়াক করা সুন্নাহ। রাসূল সাঃ যখন মৃত্যু সজ্জায়, তখন রাসূল সাঃ আয়েশা রাঃ এর কোলে শুয়ে ছিলেন এবং রাসূল (ﷺ) বার বার মেসওয়াকের দিকে তাকাচ্ছিলেন, কিন্তু রাসূল সাঃ এতোটাই অসুস্থ ছিলেন যে মেসওয়াক চিবোতে পারবেন না, তাই আয়েশা (রাঃ) মেসওয়াক চিবিয়ে দেন এবং রাসূল (ﷺ) ঐ মেসওয়াক দিয়ে মেসওয়াক করেন। হাদীসে এভাবে লালা একত্রিত হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে (বুখারীঃ৫২২৬)
★ স্ত্রীর সাথে একই সাথে গোসল করা সুন্নাহ। আয়েশা (রাঃ) এর সাথে এবং কখনো মাইমুনা (রাঃ) এর সাথে রাসূল (ﷺ) পবিত্রতার গোসল করতেন
(মুসলিমঃ৬২০, নাসাঈঃ৩৮০)
★ স্ত্রীর মুখের খাবার খাওয়া সুন্নাহ। আয়েশা (রাঃ) হাড় যুক্ত গোশত খাওয়ার পর রাসূল (ﷺ) আয়েশা রাঃ এর খাওয়া হাড় চুষে খেতেন। (মুসলিমঃ৫৭৯)
★ স্ত্রীর সাথে খেলায় প্রতিযোগিতা করা সুন্নাহ। রাসূল (ﷺ) এবং আয়েশা (রাঃ) রাত্রীতে সবাই ঘুমোলে দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন।
(ইবনে মাজাহঃ১৯৭৯,আবু দাঊদঃ২৫৭৮)
★ স্ত্রীর প্রশংসা করা সুন্নাহ। রাসূল (ﷺ) আয়েশা (রাঃ) সবার সেরা, এবং খাদিজা (রাঃ) এর ভালোবাসার প্রশংসা করতেন (বুখারীঃ৫২২৯, ৩৪১১)
★ স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া বা সফরে যাওয়া সুন্নাহ। স্ত্রীদের সফরে নিয়ে যেতে রাসূল (ﷺ) লটারী করতেন, যার নাম আসতো তাকে নিয়ে ঘুরতে যেতেন। (বুখারীঃ২৫৯৩)
★ শাওয়াল মাসে বিবাহ করা সুন্নাহ। (তিরমিযিঃ১০৯৩)
★ স্ত্রীকে সুন্দর নামে ডাকা সুন্নাহ। (রাসূল (ﷺ) আয়েশা (রাঃ) কে হূমায়রা বলে ডাকতেন)
★ স্ত্রী কে কখনো মারধর না করা সুন্নাহ। রাসূল (ﷺ) কখনো কারো উপর প্রতিশোধ নিতেন না, এবং স্ত্রীদের ও মার ধর করতেন না। (বুখারীঃ৫২০৪, বুখারীঃ ৬১২৬)
★ স্ত্রীর কোলে মাথা রেখে কোরআন তেলায়ত করা সুন্নাহ। (বুখারীঃ২৯৭)
★ স্ত্রীর কাজকর্মে সহযোগিতা করা সুন্নাহ। (বুখারীঃ ৬৭৬)
★ হায়েয অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সাধারণ মেলামেশা করা সুন্নাহ। (বুখারীঃ৩০০)
★ স্ত্রীর মুখে খাবারের লোকমা তুলে দেয়া সুন্নাহ। এবং স্ত্রীকে খাবার খাইয়ে দিলে তা সদকা হিসেবে কবুল হয়, এবং তার প্রতিদান রয়েছে। (আবু দাঊদঃ২৮৬৪)
★ স্ত্রীর রাগ অভিমান এবং মন বোঝার চেষ্টা করা সুন্নাহ। রাসূল (ﷺ) বলেন আয়েশা তুমি আমার উপর রেগে থাকলে আমি বুঝতে পারি, আয়েশা (রাঃ) বলেন হে আল্লাহর রাসূল কিভাবে বোঝেন আপনি? রাসূল (ﷺ) বলেন তুমি যখন আমার উপর রেগে থাকো তখন বলো “হে ঈবরাহিম (আঃ) এর প্রভু” আল্লাহ কে এভাবে ডাকো, আর যখন খোশ মেজাজে থাকো তখন বলো, (“হে মুহাম্মদ (ﷺ) এর প্রভু” আল্লাহ কে এভাবে ডাকো।
(বুখারীঃ৫২২৮)