Home ইসলাম কুরআনের বিশেষ বিশেষ সূরার ফযীলত

কুরআনের বিশেষ বিশেষ সূরার ফযীলত

by admin
0 comment

কুরআনের বিশেষ বিশেষ সূরার ফযীলত
কুরআনের যেসব সূরা ও আয়াতের কথা সহীহ হাদিসে বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখিত হয়েছে, সেযসব সূরা ও আয়াতের উপস্থাপন করা হল। প্রত্যেক বছর রমযান মাসে জিব্রীল আলাইহিস সালাম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একবার পুরো কুরআন খতম করতেন। আর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের বছর দু’ বার পুরো কুরআন খতম করেন। যাতে কুরআন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হৃদয়ে স্থায়ী ও স্থিরভাবে বদ্ধ মূল হয়ে যায়।

উলামায়ে কেরাম, সালফে সালেহিন রমযান ও রমযান ছাড়া অন্য মাসে কুরআন বেশি বেশি তিলাওয়াত করতেন। ইমাম যুহরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রমযান মাস আগমন করলে বলতেন, এটা কুরআন তিলাওয়াতের মাস এবং খাদ্য দানের মাস। রমযান মাসে ইমাম মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হাদিস পাঠ ও এলমি আসর পরিত্যাগ করতেন এবং পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতে আত্মনিয়োগ করতেন। কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু সপ্তাহে একবার কুরআন খতম করতেন। রমজানে প্রতি ৩ দিনে একবার খতম করতেন এবং রমযানের শেষ দশকে প্রতি দিন এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। কুরআন আমাদের উপর আল্লাহ নিয়ামত।

এই নিয়ামতের শুকর হিসেবে আমাদের বেশি বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা উচিৎ। সকল নেককারদের অনুসরণ করা উচিত। মহা পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য দিন রাতের সদ্ব্যবহার করুন। কারণ, আয়ু খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। হে আল্লাহ! আমাদের এমন তিলাওয়াতের তওফিক দান করুন, যাতে আপনার সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হই। কুরআনকে আমাদের জন্য সুপথ ও সহজ-সরল নির্ভেজাল পথ প্রদর্শক রূপে বানিয়ে দিন। কুরআনের রশ্মি ও আলোর মাধ্যমে আমাদেরকে বক্রতা, পথভ্রষ্টতা ও অন্ধকারের অতল গহ্বর থেকে উজ্জ্বল জ্যোতিময় আলোর সন্ধান দিন। এ কুরআনের মাধ্যমে আমাদের সম্মান বৃদ্ধি করুন।

আমাদেরকে গোপনীয় দোষ-ক্রটি ও অপরের দোষ চর্চা করা থেকে বিরত রাখুন এবং আমাদের যাবতীয় গোপনীয় গুনাহ গোপন রাখুন। হে পরম করুণাময় ও দয়ালু প্রভু! আমাদের পিতা-মাতা ও শান্তি প্রিয় সকল মুসলমানকে ক্ষমা করুন। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ও তার পরিবারসহ সকল সাহাবী ও অনুসরণকারীদের উপর।

১.সূরা ফাতিহার ফযীলত

ক) হযরত বগভীর রহ. নিজেস্ব সনদে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেছেন মহান আল্লাহতায়ালা বলেন যে, ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের পর সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা আল-ইমরানের শাহিদাল্লাহু আয়াত শেষ পর্যন্ত এবং কুলিল্লাহুম্মা আয়াত বিগাইরি হিসাব পর্যন্ত পাঠ করে আমি তার ঠিকানা জান্নাতে দিবো, তাকে আমার নিকট স্থান দিবো, দৈনিক সত্তরটি প্রয়োজন মিটাবো, শক্রর কবল থেকে আশ্রয় দিবো এবং শক্রর বিরুদ্ধে তাকে জয়ী করবো। (তাফসীরে মা’আরেফূল ক্বোরআন- অনুবাদ দ্বিতীয় খন্ড পৃষ্ঠা-৪৫)

খ) তাবেয়ী হযরত আবদুল মালেক রহ. ইবনে উমায়ের মুরসালরূপে বর্ণনা করেন যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূরা ফাতেহায় (শারীরিক ও মানসিক) সব রোগের আরোগ্য রয়েছে। (আদ-দায়েমী ও সুনানে বায়হাকী)

গ) হযরত আবু সাইদ রাফে’ ইবনে মুআল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “মসজিদ থেকে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কি কুরআনের সব চেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব না?” এই সাথে তিনি আমার হাত ধরলেন। অতঃপর যখন আমরা বাহিরে যাওয়ার ইচ্ছা করলাম, তখন আমি নিবেদন করলাম, “ইয়া রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! আপনি যে আমাকে বললেন তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সব চেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব?’ সুতরাং তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’ (সূরা ফাতেহা)। এটি হচ্ছে ‘সাবউ মাসানি (অর্থাৎ নামাযে বারংবার পঠিতব্য সপ্ত আয়াত) এবং মহা কুরআন; যা আমাকে দান করা হয়েছে”। (সহীর আল বুখারি)

ঘ) সাহাবী হযরত আবু সাইদ ইবনে মুআল্লা বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন :“আমি তোমাকে কুরআনের একটি সুমহান সূরা শিখাব। সেটা হলো সূরা আল ফাতেহা। যার প্রথমাংশ আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। এটা সাবউল মাসানী বা সাতটি প্রশংসাযুক্ত আয়াত এবং এক মহান কুরআন যা আমাকে দান করা হয়েছে।” (সহীহ বুখারী) সম্ভবত এ সব ফযীলতের কারণে সূরা ফাতেহার সালাতের মধ্যে পাঠ করা ওয়াজিব।

ঙ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “যে ব্যক্তি সালাত আদায় করল, কিন্তু সূরা ফাতেহা পাঠ করল না, তার সালাত ক্রটিপূর্ণ। তিনি কথাটি তিনবার বলেছেন।” তখন হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু কে জিজ্ঞাসা করা হল, আমরা তো ইমামের পিছনে থাকি ? তিনি বললেন, মনে মনে পড়বে।”

চ) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত : হযরত জিব্রীল আলাইহিস সালম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থাকা অবস্থায় বলেন, দেখুন, এটা আকাশের একটি দরজা যা এই মাত্র খোলা হল। ইতিপূর্বে কখনো তা খোলা হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর ঐ দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা রাসূলের নিকট এসে বললেন, আপনি দু’টি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনার পূর্বে কোন নবীকে দেয়া হয়নি। সেটা হল, সূরা ফাতেহা ও সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলোর সুসংবাদ। আপনি এ দু’টো তিলাওয়াত করে যে কোন হরফ দ্বারা যা চাইবেন, তা আপনাকে দেয়া হবে।

২.সূরা বাকারা ও সূরায়ে আলে-ইমরানের ফযীলত

ক) হযরত আবু উমামা বাহেলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমি রাবূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল কুরআন পাঠ করো, এটা এর পাঠকারীর জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশকারীরূপে আসবে। বিশেষত এর দু’টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও নূরানী সূরা ‘বাকারা’ ও সূরা ‘আল ইমরান’ পাঠ করবে কিয়ামতের দিন এ দু’টি সূরাও এর পাঠকারীদের নিজের ছায়াতলে নিয়ে এমনভাবে হাজির হবে, যেমন দু’টি মেঘমালা অথবা দু’টি চাঁদোয়া বা সারিবদ্ধ পাখিদের পক্ষে ওকালতি করবে। বাতিলপন্থী লোকেরা সে শক্তি রাখে না, তারা এর থেকে কোনো রবকত পাবে না। (সহীহ মুসলিম)

খ) হযরত নাওয়াস ইবনে সাময়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হযরত রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি ‘কিয়ামতের দিন আল-কুরআন এবং যেসব কুরআন ওয়ালাদের হাজির করা হবে যারা এর ওপর আমল করতো। প্রথম দিকে সূরা বাকারা ও সূরা আল ইমরান (এর আমল) অগ্ররূপে থাকবে। মনে হবে যেন সূরা দু’টি মেঘমালা অথবা দু’টি কালো রঙের চাঁদায়ো, এতে নূরের চমক বা প্রবা রয়েছে অথবা এ দু’টি যেন সারিবদ্ধভাবে উড়ন্ত পাখির দু’টি ডানা। আর তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকদের জন্য ওকালতি করবে। (সহীহ মুসলিম)

গ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত যে, হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের একটি চূড়া বা শিখর থাকে। আর আল-কুরআনের শিখর হচ্ছে সূরা বাকারা। এর একটি আয়াত আল-কুরআনের সমস্ত আয়াতের সর্দার, আর তা হচ্ছে আয়াতুল কুরসী। (জামে আত তিরমিযি)

ঘ) হযরত মা’কেল ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছে, রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূরা বাকারা আল কুরআনের সর্বেচ্চ চূড়। এর প্রত্যেক আয়াতে সাথে আশিজন করে ফেরেশতা নেমে এসেছিলো। এর ২৫৫ নম্বর আয়াকে (আয়তুল কুরসী) যার প্রথমাংশ ‘আল্লাহ তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিন চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী, আরশের নিচ থেকে বের করে এনে এটিকে সূরা বাকারতে যুক্ত করা হয়েছে। আর সূরা ইয়াসীন আল-কুরআনের হৃদয়। আল্লাহর সন্তষ্টি ও আখিরাতের মুক্তি কামনা করে কেউ এ সূরা পাঠ করলে তার গুনাহ অবশ্যই ক্ষমা করা হবে। (মুসনাদে আহমাদ. সুনানে আবুদ দাউদ, আন নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ)

ঙ) হযরত নো’মান ইবনে বশির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতায়ালা আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করার দু’হাজার বছর আগে একটি কিতাব লেখেন। সেই কিতাবটি থেকে দু’টি আয়াত নাযিল করেছেন। আর সেই আয়াত দু’টি হলো সূরা বাকারার শে দু’টি আয়াত। কোনো বাড়িতে তা তিনদিন পড়া হলেই সেখান থেকে শয়তান পালিয়ে যায়। (জামে আত তিরমিযি)

চ) রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :“তোমরা দু’টি যাহরাবীন তথা পুষ্প পাঠ কর, যথা সূরা আল-বাকারা ও সূরা আলে ইমরান। কারণ এ দু’টি সূরা কেয়ামতের দিন মেঘমালার মত অথবা দু’দয়াপাখির ঝাঁকের ন্যায় সারিবদ্ধভাবে উড়বে। এরা উভয়ে পাঠকের পক্ষ গ্রহণ করবে। তোমরা সূরা বাকারা পাঠ কর। কারণ তার পাঠ করা বরকতের কারণ, তার পাঠ ত্যাগ করা হতাশা। অলসরা তা করতে পারবে না। হযরত মুআবিয়া বলেন, আমার শ্রুত হয়েছে যে, বাতালার অর্থ জাদু।”(সহীহ মুসলিম)

ছ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “ঘরে সূরা আল-বাকারা তিলাওয়াত করা হয়, সে ঘরে শয়তান প্রবেশ করে না।” শয়তান ঘরে প্রবেশ না করার কারণ হচ্ছে তাতে আয়াতুল কুরসী রয়েছে। (সহীহ মুসলিম)

জ) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বললেন, একদা জিব্রাইল আলাইহিস সালাম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসে ছিলেন। এমন সময় উপর থেকে একটি শব্দ শুনতে পেলেন। তিনি (জিব্রাইল) মাথা তুলে বললেন, ‘এটি আসমানের একটি দরজা, যা আজ খোলা হল। ইতোপূর্বে এটা কখনও খোলা হয় নাই। ওদিক দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতির্ণ হল। এই ফেরেশতা যে দুনিয়াতে অবতরণ করেছে, ইতোপূর্বে কখনও অবতরণ করেনি। সুতরাং তিনি এসে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম জানিয়ে বললেন, ‘‘আপনি দুটি জ্যোতির সুসংবাদ নিন। যা আপনার আগে কোন রাসূলকে দেওয়া হই নাই। (সে দুটি হচ্ছে) সূরা ফাতেহা ও সূরা বাক্কারার শেষ আয়াতসমূহ। আপনি এ দুটো তিলাওয়াত করে যে কোন হরফ দ্বারা যা চাইবেন, তা আপনাকে দেয়া হবে।” (সহীহ মুসলিম)

ঝ) হযরত আবু মাসাঊদ বদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত দু’টি পাঠ করবে, তার জন্য সেই দু’টি যথেষ্ট হবে’। (সহীহ আল বুখারী) বলা হয়েছে যে, সে রাতে অপ্রীতিকর জিনিসের মোকাবেলায় যথেষ্ট হবে। অথবা তাহাজ্জুদের নামায থেকে যথেষ্ট হবে।

ঞ) হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের ঘর-বাড়িগুলোকে কবরে পরিণত করো না। কেননা, যে বাড়িতে সূরা বাক্কারা পাঠ করা হয়, সে বাড়ি থেকে শয়তান পলায়ন করে’। (সহীহ মুসলিম) (অর্থাৎ সুন্নত ও নফল নামায তথা পবিত্র কুরআন পড়া ত্যাগ করে ঘরকে কবর বানিয়ে দিয়ো না। যেহেতু কবরে এ সব বৈধ নয়)।

ট) হযরত আবু মাসাঊদ বদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত দু’টি পাঠ করবে, তার জন্য সেই দু’টি যথেষ্ট হবে’। (সহীহ আল বুখারী) বলা হয়েছে যে, সে রাতে অপ্রীতিকর জিনিসের মোকাবেলায় যথেষ্ট হবে। অথবা তাহাজ্জুদের নামায থেকে যথেষ্ট হবে। (অর্থাৎ সুন্নত ও নফল নামায তথা পবিত্র কুরআন পড়া ত্যাগ ক’রে ঘরকে কবর বানিয়ে দিয়ো না। যেহেতু কবরে এ সব বৈধ নয়)।

ঠ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাউস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তি সূরা বাকারা দশটি আয়াত অতি ভোরবেলায় পাঠ করে, তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান তার নিকটবর্তী হতে পারে না। সন্ধ্যায় সময় পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার নিকট শয়তান যেতে পারে না। তার জান মাল ও ইজ্জত-সম্মান নিরাপদে থাকবে, কোন প্রকার ক্ষতি তার হবে না। (সুনানে আদ-দারেমী)

ড) তাবরানী কিতাবে বর্ণিত আছে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা বাকারার দশটি আয়াত অর্থাৎ সুরার প্রথম চার আয়াত, আয়তুল কুরসী ও পরের দুই আয়াত আর সূরার সর্বশেষ তিনটি আয়াত তেলাওয়াত করবে, সকাল পর্যন্ত তার ঘরে শয়তান প্রবেশ করতে পারবে না।

ঢ) হযরত আবু মাসউদ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূরা বাকারার শেস দুই আয়াত, যে তা রাতে পড়বে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে। (সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিম)

ন) হাবেয়ী হযরত আয়ফা বিন আবদিল কালায়ী রহ. বলেন, এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল-কুরআনের কোন সূরা অধিক মর্যাদাবান? তিনি বলেন, ‘কুহুওয়াল্লাহু আহাদ’। সে পুনারয় জিজ্ঞেস করলো, আল কুরআনের কোন আয়াত অধিকতর মর্যাদাবান? তিনি বললেন, ‘আয়াতুল কুরসী’। আল্লাহ লা-ইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইউল কাইউম। সে আবার জিজ্ঞেস করলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ আল-কুরআনের কোন আয়াত এমন যার বরকতে আপনার এবং আপনার উম্মতের প্রতি পৌঁছতে ভালোবাসেন। তিনি বললেন, সূরা বাকারার শেষ আয়াত। আল্লাহতায়ালা তাঁর আরশের নিচের ভান্ডার হতে তা এই ইম্মতকে দান করেছেন। দুনিয়া ও আখিরাতের এমন কোনো কল্যাণ নেই যা এতে নেই। (সুনানে আদ-দারমী)

ত) হযরত উসমান বিন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন যে, ব্যক্তি রাতে সূরা আল ইমরানের শেষের দিকের আয়াতগুলো পড়বে তার জন্য পুরো রাত নামাযে কাটানোর সওয়াব লেখা হবে। (সুনানে আদ-দারমী, মিশকাত)

তাবেয়ী হযরত মাকহুল রহ. বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমুয়ার দিন সূরা আল ইমরান পড়বে, ফেরেশতারা তার জন্য রাত পর্যন্ত দোয়া করতে থাকবেন। (আদ-দারমী)

থ) তাবেয়ী হযরত যোবায়ের ইবনে নোফায়ের রহ. বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহতায়ালা সূরা বাকারাকে এমন দু’টি আয়াত দ্বারা সমাপ্ত করেছেন যা আমাকে আল্লাহর আরশের নিচে ভান্ডার থেকে দান করা হয়েছে। সূতরাং তা শিক্ষা করবে এবং তোমাদের নারীদেরকে শিক্ষা দিবে। কেননা, এতে রয়েছে ক্ষমা প্রার্থনা, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় ও দোয়া। ( সুনানে আদ-দারেমী)

দ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে সূরা মু’মিনের হা-মীম হতে ইলাইহিন মাছির পর্যন্ত (আয়াত : ১-৩) এবং আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে বিকাল পর্যন্ত এর কারণে তাকে নিরাপদ রাখা হবে। আর যে ব্যক্তি বিকালে তা পাঠ করে সকাল পর্যন্ত এর কারণে তাকে হিফাযত করা হবে। ( জামে আত তিরমিযি ও আদ-দারেমী)

ধ) হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এসব আয়াত সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার ইহকাল-পরকালের সমুদয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে জামিনদার হবেন। (সুনানে আবু দাউদ)

আয়াতুল কুরসী পড়ার ফযীলত

ক) হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি এই কাঠের মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলেছেন : যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের পর আয়তুল কুরসি পড়বে তার বেহেশতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাধা নেই। আর যে ব্যক্তি শয়ন কালে এই আয়াতুল কুরসি পড়বে আল্লাহতায়ালা তার ঘর, তার প্রতিবেশীর ঘর এবং আশে পাশের আরও কিছু সংখ্যক ঘরকে নিরাপদে রাখবেন। (মেশকাত শরীফ)

খ) হযরত উবাই ইবনে কা’ব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে আবু মুনযির! তুমি কি জান, মহান আল্লাহর গ্রন্থ (আল-কুরাআন) এর ভিতর তোমার যা মুখস্থ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় (মর্যাদাপূর্ণ) আয়াত কোনটি?’ আমি বললাম, ‘সেটা হচ্ছে আয়াতুল কুরসী’। সুতরাং তিনি আমার বুকে চাপর মেরে বললেন, ‘আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞান তোমাকে ধন্য করুক’। (সহীহ মুসলিম)

(অর্থাৎ তুমি, নিজ জ্ঞানের বরর্কতে উক্ত আয়াতটির সন্ধান পেয়েছ, সে জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।)

গ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বললেন : (একবার) রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমযানের যাকাত (ফিৎরার মাল-ধন) দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেন। বস্তুতঃ (আমি পাহারা দিচ্ছিলাম ইত্যবসরে) একজন আগমনকারী এসে আজঁলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল। আমি তাকে ধরলাম এবং বললাম, ‘তোকে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করব’; সে আবেদন করল, আমি একজন সত্যিকারের অভাবী। পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব আমার উপর, আমার দারুন অভাব’; কাজেই আমি তাকে ছেড়ে দিলাম।

সকালে (রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হলাম); রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হে আবু হুরাইরা! গত রাতে তোমার বন্দী কী আচারন করেছে’? আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সে তার অভাব ও (অসহায়) পরিবার-সন্তানের অভিযোগ জানাল। সুতরাং তার প্রতি আমার দয়াহলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম’; তিনি বললেন, ‘সতর্ক থেকো, সে আবার আসবে’। আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আনুরুপ উক্তি শুনে সুনিশ্চিত হলাম যে, সে আবার আসবে। কাজেই আমি তার প্রতীক্ষায় থাকলাম। সে (পুর্ববৎ) এসে আজঁলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল। আমি বললাম, ‘অবশ্যই তোকে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর কাছে পেশ করব’; সে বলল, ‘আমি অভাবী,পরিবারের দায়ত্ব আমার উপর, (আমাকে ছেড়ে দাও) আমি আর আসব না’; সুতরাং আমার মনে দয়া হল। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম।

সকালে উঠে (যখন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে গেলাম তখন) রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘আবু হুরাইরা! গত রাতে তোমার বন্দী কী আচারণ করেছে’? আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! সে তার অভাব ও অসহায় সন্তানের-পরিবারের অভিযোগ জানাল। সুতরাং আমার মনে দয়া হলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম’; তিনি বললেন, ‘সতর্ক থেকো, সে আবার আসবে’। সুতরাং তৃতীয়বার তার প্রতীক্ষায় রইলাম। সে (এসে) আজঁলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল। আমি তাকে ধরে বললাম ‘‘এবারে তাকে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে হাযির করবই’; এটা তিনবারের মধ্যে শেষবার।

‘ফিরে আসবো না’ বলে তুই আবার ফিরে এসেছিস’’; সে বলল ‘তুমি আমাকে ছেড়ে দাও, আমি তোমাকে এমন কতকগুলি শব্দ শিখিয়ে দেব, যার দ্বারা আল্লাহ তোমার উপকার করবেন’; আমি বললাম ‘সেগুলি কী?’ সে বলল, ‘যখন তুমি (ঘুমাবার জন্য) বিছানাই যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করে (ঘুমাবে); তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে। আর সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না’। সুতরাং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আবার সকালে (রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গেলাম); তিনি আমাকে বললেন, ‘‘তোমার বন্দী কী আচারণ করেছে?’’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সে বলল, ‘‘আমি তোমাকে এমন কতিপয় শব্দ শিখিয়ে দেব, যার দ্বারা আল্লাহ আমার কল্যাণ করবেন’’; বিধায় আমি তাকে ছেড়ে দিলাম’;

তিনি বললেন ‘‘সে শব্দগুলি কী?’’ আমি বললাম, ‘সে আমাকে বলল, ‘‘যখন তুমি বিছানাই (শোয়ার জন্য) যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুলল হাইয়্যুল কাইয়্যুম’ পড়ে নেবে’’; সে আমাকে আর বলল, “তার কারনে আল্লাহর তরফ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবে। আর সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না’’। (এ কথা শুনে) তিনি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘শোনো ! সে নিজে ভীষণ মিথ্যাবাদী; কিন্তু তোমাকে সত্য কথা বলেছে। হে আবু হুরায়রা! তুমি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথা বলছিলে?’’ আমি বললাম, ‘জী না’; তিনি বললেন, ‘‘সে ছিল শয়তান’’। (সহীহ আল বুখারী)

ঘ) হযরত উবাই ইবনে কা’ব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে আবু মুনযির! তুমি কি জান, মহান আল্লাহর গ্রন্থ (আল-কুরাআন) এর ভিতর তেমার যা মুখস্থ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় (মর্যাদাপূর্ণ) আয়াত কোনটি? আমি বললাম, ‘সেটা হচ্ছে আয়াতুল কুরসী’। সুতরাং তিনি আমার বুকে চাপর মেরে বললেন, ‘আবুল মুনযির! তেমার জ্ঞান তোমাকে ধন্য করুক’। (সহীহ মুসলিম)

ঙ) হযরত আবু উমাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনায় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতি ফরয নামাযের পর আয়াতুল করসী পাঠ করলে, সে পাঠকারী মু’মিন মৃত্যুর সাথে সাথেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সুনানে নাসায় ও তাবরানী)

চ) সহীহ বুখারী এর এক হাদীসে রাসূলে করীম সাল্লøাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা রাতে নিদ্রার জন্য বিছানায় যাও, তখন আয়তুল করসী পড়ে নাও। এরূপ করলে মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য রক্ষী নিযুক্ত হয়ে যাবে এবং শয়তান তোমাদের কাছে আসতে পারবে না।

ছ) হযরত আবু আইউব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর ‘আয়তুল করসী’ শাহিদাল্লাহ (সূরা আল-ইমরান-৩ আয়াত : ১৮ আয়াত) এবং কুলিল্লাহুম্মা গাইরি হিসাব পর্যন্ত পাঠ করে আল্লাহতায়ালা তার গুনাহ ক্ষমা করে তাকে জান্নাতে স্থান দিবেন। এছাড়া তার সত্তরটি প্রয়োজন মিটাবেন, এর সর্বনিম্ম প্রয়োজন হবে ‘মাগফিরাত’ (তাফসীরে রূহুল মা’আনী)

জ) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের একটি চূড়া বা শিখর থাকে। আর আল-কুরআনের শিখর হচ্ছে সূরা বাকারা। এর একটি আয়াত আল-কুরআনের সমস্ত আয়াতের সর্দার, আর তা হচ্ছে আয়াতুল কুরসী। (জামে আত তিরমিযি)

সূরা হাশর পড়ার ফযীলত

ক) সূরা হাশরের শেষাংশ প্রত্যেহ সকালে পাঠ করলে ৭০ হাজার ফেরেশতা সন্ধা পর্যন্ত ও সন্ধায় পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত পাঠকারীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন ও তার রক্ষণাবেক্ষন করেন। ফলে সকল প্রকার ফায়দা হাসিল হয়। যদি এ সময়ের মধ্যে সে মারা যায়। তবে শহীদি মর্তবা পাবে। এটি একটি উৎকৃষ্ট আমল। তিন বার আউযুবিল্লাহিচ্ছামিইল আলিম হিমিনাশ শায়তানির রাজীম ও একবার বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পাঠ করে উক্ত আয়াতটি পড়তে হয়।

সূরা ইখলাস পাঠের ফযীলত

ক) হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি লোকের নেতৃত্বে একদল সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। তারা ফিরে এসে রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন : হে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! যাকে আপনি আমাদের নেতা মনোনিত করেছেন তিনি প্রত্যক নামাজে কিরাআতের শেষে সুরা ইখলাস পাঠ করতেন, রাসূল কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেন, সে কেন এরুপ করত তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করতো? তাকে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, এ সূরায় আল্লাহর রাহমানুর রাহীমের গুণাবলী বর্ণণা করা হয়েছে, এ কারণে এ সুরা পড়তে আমি খুব ভালবাসি। এ কথা শুনে রাসুল বললেন : তাকে জানিয়ে দাও যে,আল্লাহও তাকে ভালবাসেন। (সহীহ বুখারী)

খ) হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, এক ব্যক্তি নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি এই (সূরা) ‘কূল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ ভালবাসি। তিনি বললেন, ‘এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে’। (সহীহ আল বুখারী)

গ) হযরত আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সেই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন, সূরা ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।”(সহীহ মুসলিম)

ফযীলতের ক্ষেত্রে সূরায়ে এখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান। এ কথার অর্থ এই নয় যে, এ সূরা পুরো কুরআনের মোকাবিলায় যথেষ্ট। কারণ, কোন কিছু ফযীলতের দিক দিয়ে অন্য কোন বিষয়ের সমপর্যায়ের হলে এটা জরুরি নয় যে, এর ফলে অন্যটা না হলেও চলবে। সুতরাং কেউ সালাতে সূরা ফাতেহা ছেড়ে সূরা এখলাস তিনবার পড়লে তার সালাত শুদ্ধ হবে না। যেমন হাদিসে এসেছে, হযরত আবু আইউব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীচের দোয়ার ফযীলতের ব্যাপারে বলেছেন : যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তার কোন শরিক নেই, সকল রাজত্ব তার, তার জন্য সকল প্রশংসা। এ দোয়া ১০ বার পড়ল, সে যেন ইসমাইল আলাইহিস সালামের সন্তানদের মধ্য থেকে চারজনকে মুক্ত করল।” এ দোয়ার ফযিলত জানার পর কেউ যদি কাফ্ফারার ৪ জন কৃতদাস মুক্ত করার পরিবর্তে এ যিকির করে, তবে তা গ্রহনযোগ্য হবে না। কারণ, এখানে তাকে গোলাম-ই আজাদ করতে হবে।

ঘ.যে ব্যক্তি একবার সূরা ইখলাস পাঠ করবে সেই ব্যক্তি কুরআনুল কারীম এক তৃতীয়াংশ পাঠ করার সওয়াব লাভ করবে।

ঙ.যে ব্যক্তি দশবার পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা নিজ কুদরতি হাতে জান্নাতের মধ্যে বিশেষ মর্যাদাশীল একটি মহল তৈরি করবেন।

চ.যে ব্যক্তি অধিক পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা আর জন্য জান্নাতে ওয়াজিব করে দিবেন।

ছ. যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণ পাঠ করবে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর লাশ বহন করার জন্য হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম এর সাথে সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করবেন। সেই ফেরেশতারা তাঁর লাশ বহন করবে এবং জানাযায় শরিক হবে।

সূরা নাস ও সূরা ফালাকের ফযীলত

ক) হযরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :‘তুমি কি দেখনি আজ রাতে অবতীর্ণ হয়েছে এমন কিছু আয়াত, যেরূপ আয়াত আর লক্ষ্য করা যায়নি? তা হল সূরা ফালাক ও সূরা নাস।” (সহীহ মুসলিম)

খ) ইমাম নাসায়ী রহ. বর্ণনা করেন : রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উকবা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে নির্দেশ দিলেন, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করার জন্য। তারপর তিনি বললেন, এ দু’টি সূরার ন্যায় অন্য কোন জিনিসের মাধ্যমে কেউ প্রার্থনা করেনি, আর এ দু’টি সূরার ন্যায় অন্য কোন জিনিসের মাধ্যমে কেউ আশ্রয় প্রার্থনা করেনি।”(সুনানে নাসাঈ)

গ) হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রাঃ) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন ‘রাসূলুল্লাহ (সূরা ফালাক্ক ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। পরিশেষে যখন উক্ত সূরা দু’ টি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সূরা দু’টি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন’। (জামে আত তিরমিজী)

সূরা ইয়াসিন পড়ার ফযীলত

১.হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : প্রত্যেক জিনিষের একটা কলব আছে। সূরা ইয়াসীন কুরআনের কলব। যে উহা একবার পড়বে আল্লাহ তার জন্য দশবার কুরআন পড়ার সওয়াব নির্ধারণ করবেন। (জামে আত তিরমিযি)

২.রাসূল পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সূরা ইয়াসিন কুরআনের হৃৎপি-।’ এ হাদিসে আরো বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি সূরা ইয়াসিন আল্লাহ ও পরকালের কল্যাণ লাভের জন্য পাঠ করবে তার মাগফিরাত হয়ে যায়। তোমরা তোমাদের মৃতদের জন্য এ সূরা তিলাওয়াত করো।

৩. হযরত মা’কেল ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সুন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে তার পূর্ববর্তী সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে। সুতরাং এ সূরাটি মুমূর্ষ লোকের জন্য তেলাওয়াত করো। (সুনানে বায়হাকী-শোয়াবুল ঈমান)

৪.হযরত মা’কেল ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আল-কুরআনের “ক্বালব” বা হৃদয় হলো সূরা ইয়াসীন। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতের মুক্তি কামনা করে এই সূরা ইয়াসীন পাঠ করবে । (মুসনাদে আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ, আন নাসায়ী, ইবনে মাজাহ ওহাকীম)

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের ‘ক্বালব’ বা হৃদয় থাকে, আল-কুরআনের হৃদয় হলো সূরা ইয়াসীন। যে ব্যক্তি একবার সূরা ইয়াসীন পড়বে, মহান আল্লাহ তাকে দশবার সমগ্র কুরআন পড়ার সওয়াব দান করবেন। (জামে আত তিরমিজি, সুনানে আদ-দারেমী)

৫.হযরত জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতের বেলায় আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সূর ইয়াসীন পাঠ করবে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। (মালিক, ইবনে সুন্নী ও সহীহ ইবনে হাব্বান)

৬.হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণিত হাদীসে আছে, আল্লাহ তার সে রাতের গুনাহ মাফ করবেন। (বায়হাকী, আদ-দারেমী, তাবরানী ও অন্যন্য)

৭.হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহতায়ালা আসমান এবং যমীন সৃষ্টির এক হাজার বছর পূর্বে সূরা ত্বাহা এবং সূরা ইয়াসীন পাঠ করলেন। তখন ফেরেশতারা তা শুনে বললেন, ধন্য সে জাতি যাদের প্রতি তা নাযিল হবে, ধন্য সেই বক্ষ যে তা ধারণ করবে এবং ধন্য সেই মুখ যে তা উচ্চারণ করবে। (সুনানে আদ-দারেমী)

৮.হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আল কুরআনের এমন একটি সূরা আছে যা এর পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং এর শ্রোতাকে মাফ করা হবে, এটাই সূরা ইয়াসীন ( তাফসীরে সূরা ইয়াসীন)

৯.তাবেয়ী হযরত আতা ইবনে রিবাহ রহ. বলেন, আমার নিকট বিশ্বস্ত সূত্রে কথটি পৌঁছেছে যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি দিনের প্রথম দিকে সূরা ইয়াসীন পাঠ করবে তার সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (ইবনে আব্বাসের রাদিয়াল্লাহু আনহু হাদীসে বর্ণিত আছে, সূরা ইয়াসীন কবরের আযাব হতে মুক্তিদাতা। (জামে আত তিরমিজি)

৯.হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি ভোরে সূরা ইয়াসীন পাঠ করবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার যাবতীয় কাজ সহজ করে দেয়া হবে।, আর সে সন্ধা রবলায় তা পাঠ করবে ভোর পর্যন্ত তার সাব কাজ সহজ করে দেয়া হবে। (সুনানে আদ-দারেমী)

১০.হযরত আবু বকার সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনায় রাসূল রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমুয়া বারে পিতা-মাতা উভয়ের বা এক জনের কবর যিয়ারত করবে এবং সেখানে সূর ইয়াসীন তেলাওয়াত করবে এতে মৃতের নিকট তো সওয়াব পৌঁছবেই, আল্লাহতায়ালা প্রত্যেকটি অক্ষরের বদলে পাঠকারীর গুনাহ মাফ করবেন। (তাফসীরে সূরা ইয়াসীন)

১১.হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে সূরা ইয়াসীন পাঠ। করবে এবং এই অভ্যাসে থেকে মারা যাবে, সে শহীদরূপে গণ্য হবে। (তাবারানী ও অন্যন্য)

১২.বায়হাকী গ্রন্থে উদ্ধৃত একটি হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি এটা (সূরা ইয়াসীন) পাঠ করে তাকে বিশটি হজ্জের পরিমান সওয়াব দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি তা শ্রবণ করে তাকে মহান আল্লাহর রাস্তায় এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা দান করার সওয়াব দেয়া হয়। কেউ তা লেখে ধৌত করে পানি পান করলে তার পেটে এক হাজার রোগের ওষধ রয়েছে, এক হাজার নূর, এক হাজার বিশ্বাস, এক হাজার রবকত, এক হাজার রহমত প্রবেশ করে এবং তার ভেতরকার যাবতীয় রোগ ও জটিলতা দূর হয়। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে এই মর্মে হাদীস বর্ণিত আছে। এমনও একটি বর্ণনা পাওয়া যায় যে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে সূরা ইয়াসীন পাঠ করতে থাকবে,তার জন্য জান্নাতের আটটি দরাজ খোলা রাখা হবে। (তাফসীরে সূরা ইয়াসীন-১৯৬৩)

১৩.অন্য একটি হাদীসে আছে যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সূরা ইয়সীন পাঠ করবে, তার দিন-রাত শান্তিতে কাটবে। তার যতো অভাবই থাকুন, তা দূর হবে এবং সে ধনী ও ঐশ্বর্যশীল হবে। (তাফসীরে সূরা ইয়াসীন)

সূরা তাওবার শেষ দু’ই আয়াত পাঠের পযীলত

হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সূরা তাওবার শেষ দু’টি আয়াত সাতবার করে পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার সব কাজ সহজ করে দিবেন। (কুরতুবী)

সূরা মূলক পড়ার ফযীলত

ক) হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কুরআনের ত্রিশ আয়াতে একটি সুরা (সূরা মূলক) আছে, যা এক ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করেছে। ফলে তাকে মাফ করে দেয়া হয়েছে। সূরাটি হচ্ছে তাবারা কাল্লাজি বেইয়াদিহীল মুলক। (আবু দাউদ, জামে আত তিরমিযি, আন নাসায়ী, ইবনে মাযাহ)

সূরা কাহাফ পড়ার ফযীলত

ক) হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‘যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দিক থেকে দশটি আয়াত মুখস্ত করবে, সে দাজ্জালের (ফিৎনা) থেকে পরিএাণ পাবে।’’ অন্য বর্ণনায় ‘কাহাফ সূরার শেষ দিক থেকে’ উল্লেখ হয়েছে। (সহীহ মুসলিম, আবু দাউদ ও আন নাসায়ী)

খ) হযরত বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ব্যক্তি সূরা কাহাফ তেলওয়াত করেন। পাশে একটি ঘোড়া বাধা ছিলো দু’টি রশি দ্বারা। এসময় এক খন্ড মেঘ তাকে ঢেকে নিলো। তা তার নিকট হতে নিকটতর হতে লাগলো আর ঘোড়াটি লাফাতে লাগলো। ভোরে উঠে লোকটি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে উল্লেখ করলো। তিনি বললেন, এটা ছিলো রহমত যা আল-কুরআনের কারণে নেমে এসেছিলো। (সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিম)

গ) হযরত আবু সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি জুমআর দিনে সূরা কাহাফ পড়বে তার ঈমানের নূর এক জুমুয়া হতে অন্য জুমুয়া পর্যন্ত চমকিতে থাকবে। (সুনানে বায়হাকী-দাওয়াতে কবীর)

ঘ) হযরত আবু সায়ীদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ পড়বে তার জন্য ওই সূরা তার বাসস্থান হতে মক্কা পর্যন্ত একটা নূর বা জ্যোতি কিয়ামত দিবসে অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি এ সূরার শেষ দশ আয়াত পড়বে দাজ্জাল তার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না। আর যে ব্যক্তি অযু করে পড়বে সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা লা-ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা’ তার নাম খোলা পত্রে লিখিত হবে অতঃপর এতে এমন সীল মার হবে যা কিয়ামত পর্যন্ত ভাঙা হবে না। (হাকিম)

সূরা রূম পাঠের ফযীলত

হযরত আবু দাউদ , তাবারানী, ইবনে সুন্নী প্রমুখ হাদীসের ইমাম হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত করেন যে, সূরা রূম এর ১৭-১৯ আয়অত তিনটি সর্ম্পকে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ব্যক্তি সকালে তা পাঠ করে তার সারা দিনের আমলের ক্রটিসমূহ এর বরকতে দূর করে দেয়া হবে। (তাফসীরে রূহুল মা’আনী)

You may also like